সারা বাংলা

জুড়ীর কমলা টক হলেও নিরাপদ

মৌলভীবাজারে সবচেয়ে বেশি কমলা উৎপাদন হয় জুড়ী উপজেলায়। এসব কমলা যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। জুড়ীর কমলা কিছুটা টক স্বাদের হলেও এগুলো শতভাগ বিষমুক্ত ও নিরাপদ।

উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন কমলাবাগান ঘুরে চাষিদের সাথে কথা বলে যানা যায়, তাদের কমলার চাহিদা ব্যাপক। কারণ, তারা কমলায় বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ করে না।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ১৭৮ হেক্টর জমিতে ১৪৬টি কমলাবাগান আছে। কমলাচাষি আছেন ১৪৬ জন। সবচেয়ে বেশি ৯২ হেক্টর জমিতে কমলা চাষ হয় জুড়ী উপজেলায়। বড়লেখায় ৬০ হেক্টর ও কুলাউড়ায় ২০ হেক্টর জমিতে কমলা চাষ হয়।

গত বছর প্রতি হেক্টরে কমলার উৎপাদন ছিল চার থেকে সাড়ে চার টন। এবছর প্রতি হেক্টরে ৬ টন কমলা উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।

লালছড়া এলাকার কমলাচাষি জয়নুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, জেলার বাইরে যেকোনো এলাকায় কমলা বিক্রি করলে আমরা একটু বেশি লাভবান হই। প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়। আমি ভৈরবে নিয়ে এগুলো বিক্রি করি। সেখানে এর চাহিদা অনেক।

কমলাচাষি জাছির আহমদ বলেন, আমরা কমলা মিষ্টি করার জন্য অতিরিক্ত কোনো মেডিসিন দিই না। এ কারণে কিছুটা টক থাকে। সেজন্য স্থানীয়রা এ কমলা তেমন নিতে চায় না।

তিনি বলেন, গাছের রোগবালাই দমনে কিছু ওষুধ প্রয়োগ করি। এছাড়া, অন্য কোনো ওষুধ দিই না। একটু টক হলেও এর স্বাদই আালাদা।

কমলাচাষি খোরশেদ আলম বলেন, আমাদের এক হাজারের মতো গাছ আছে। এই গাছগুলোতে যা ফল ধরে, তার শতভাগ ফলই নিরাপদ। কারণ, আমরা এতে কোনো ধরনের মেডিসিন বা ফরমালিন দিই না। অনেকেই বলে, এগুলো একটু টক। কিন্তু এই টক কমলাগুলোই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

চাষিরা বলছেন, জুড়ীতে মূলত দুই ধরনের কমলার চাষ হয়- নাগপুরী ও খাসি। এখানে খাসি কমলার চাষ বেশি হয়। নাগপুরী কমলাগুলো আকারে বড়, খাসি তুলনামূলক ছোট। নাগপুরী কমলার চেয়ে খাসি জাতের কমলা একটু টক হয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী রাইজিংবিডিকে জানান, কমলার রোগবালাই দমনে নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করতে হয়। এছাড়া, ফলে অন্য কোনো ধরনের ওষুধ বা ফরমালিন দেয়া হয় না। এ কারনে জু্ড়ীর কমলা শতভাগ বিষমুক্ত বলা যায়।

তিনি বলেন, অনেক মেডিসিন আছে, যা কমলাতে প্রয়োগ করলে ফলটি মিষ্টি হয়। কিন্তু এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

তিনি আরো বলেন, লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ প্রকল্পে (২০১৯-২০২৪) বছরমেয়াদি একটি প্রকল্প চালু হবে। সেখানে বারি কমলা-১, ২ ও ৩ দিয়ে নতুন বাগান করা শুরু হবে।

 

মৌলভীবাজার/সাইফুল্লাহ হাসান/রফিক