সারা বাংলা

অ্যালোভেরার শরবতে ফিরেছে সচ্ছলতা

সাত ভাই-বোন আর মা-বাবাকে নিয়ে অভাবের সংসার ছিল রবিউল আলমের। লেখাপড়া কম থাকায় অনেক দিন বেকার ছিলেন। জীবিকার প্রয়োজনে নারায়ণগঞ্জে প্লাস্টিকের কারখানায় কাজ নেন।

নারায়ণগঞ্জে থাকার সময় অ‌্যালোভেরার শরবত পান করতেন রবিউল। এটা ভালো লাগত তার। পরে নিজেই অ‌্যালোভেরার শরবত বিক্রি শুরু করেন। এ ব‌্যবসা করে সংসারে সচ্ছলতা ফিরেছে রবিউলের।    

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার সিংগাঁও গ্রামের মনাই মিয়ার ছেলে রবিউল আলম। বর্তমানে জেলার শায়েস্তাগঞ্জ শহরের তালুগড়াই গ্রামে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।

প্রায় সাত বছর ধরে অ্যালোভেরার শবরত বিক্রি করছেন রবিউর আলম। প্রতিদিন বিকেলে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে পার্কিংয়ে বসে অ্যালোভেরার শরবত বিক্রি করেন রবিউল। প্রতি গ্লাস ১০ টাকা। অনেক মানুষ শরবত কিনে পান করেন। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা লাভ হয় রবিউলের।

রবিউল আলম বলেন, বারো মাস এ শরবত বিক্রি করা যায়। লোকজন এখন স্বাস্থ‌্যসচেতন। অনেকেই আমার তৈরি শরবত পান করেন। এতে তাদের অনেক উপকার হচ্ছে। ভেষজ উদ্ভিদ অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর অনেক গুণ। এটি রস হিসেবে খাওয়া যায়, ত্বকের প্রদাহে প্রতিষেধক হিসেবে লাগানো যায়।

এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, জিংক, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ফলিক অ্যাসিড, অ্যামিনো অ্যাসিড ও ভিটামিন-এ, বি৬ ও বি২ ইত্যাদি।

রবিউলের হাতের তৈরি অ্যালোভেরার শরবতের প্রশংসা করেন শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ গাজীউর রহমান ইমরান। তিনি বলেন, অ‌্যালোভেরার শরবত মাঝে মাঝে খাওয়া হয়। এটা অনেক উপকারী।

ডা. এম এ মোতালিব বলেন, হজমশক্তি বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরার তুলনা হয় না। এর অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান পাকস্থলি ঠান্ডা রাখে এবং গ্যাসের সমস্যা দূর করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানি বা গুড়ের শরবতের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। নিয়মিত অ্যালোভেরার রস খেলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে। এতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। চুলের শুষ্কতা এবং ত্বকের চুলকানি দূর করে। ওজন কমাতে অ্যালোভেরার জুস অনেক কার্যকরী। এর জুস কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রাখে। এটি দূষিত রক্ত দেহ থেকে বের করে দেয় এবং হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়া, অ্যালোভেরার জুস দাঁত ও মাড়ির ব্যথা এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে। হবিগঞ্জ/মো. মামুন চৌধুরী/রফিক