সারা বাংলা

মেঘালয়ে বাংলাদেশি পর্যটকরা দুর্ভোগ-আতঙ্কে

প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড খ্যাত ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং বেড়াতে গিয়েছেন সিলেটের কলেজছাত্র সায়েফ (ছদ্ম নাম)। তারা তিনজন বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের তামাবিল ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন।

স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার দিকে তারা শিলং শহরে যখন প্রবেশ করেন, তখন সেখানকার বাসিন্দারা বিক্ষোভ করছিলেন। মানুষের ভিড় ঠেলে যখন তারা একটি হোটেলে প্রবেশ করলেন, ঠিক তখনই কারফিউ ঘোষণা হয়। এরপর থেকেই হোটেল রুমে সময় কাটাচ্ছেন তারা।

ভারতের আইনসভায় পাস হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের (সিএবি) বিরুদ্ধে প্রতিবাদে উত্তাল আসাম রাজ্যসহ গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত। আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যের পর বিক্ষোভ শুরু হয়েছে মেঘালয় রাজ্যের শিলংসহ বিভিন্ন এলাকায়।

পাহাড়ি এ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী শিলংয়ের কিছু অংশে কারফিউ জারি করেছে রাজ্যের প্রশাসন।

শুক্রবার রাত ৭টার দিকে হোয়াটসআপে কথা হয় সায়েফের সঙ্গে। তিনি জানালেন, খুব আতঙ্ক নিয়ে তাদের সময় কাটছে। বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় দুই ঘণ্টা পুরো শিলং বিদ্যুতবিহীন ছিল, তখন ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ হয়ে যায়। তবে এখন ইন্টারনেট চালু আছে।

তিনি বলেন, কারফিউ জারির পর থেকে হোটেল-রেস্টুরেন্টও বন্ধ। শুক্রবার ভোরে পুলিশ বাজার পয়েন্টে কয়েকটি খাবারের ফুডকোর্ট খোলা ছিল, তখন তারা নাস্তা করেছিলেন। তবে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ এসে সড়কে থাকা জনসাধারণকে সরিয়ে দেয়। এরপর থেকে তারা হোটেল রুমে রয়েছেন। রাতে খাবারের কোনো ব্যবস্থা নেই বলে জানান তিনি।

নিজেদের অবস্থা বর্ণনা করে সায়েফ বলেন, এখন তারা না পারছেন বেড়াতে, না পারছেন দেশে ফিরতে। দেশে স্বজনরাও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। হোটেল কক্ষে ঘুমিয়ে-বসে সময় পার করতে হচ্ছে। তারা যে হোটেল উঠেছেন, সেখানে তাদের মতো বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি আটকা পড়েছেন। একই সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের পর্যটকরাও আছেন বলে জানান তিনি।

একই কথা বললেন শরিফুল। তিনিও বৃহস্পতিবার শিলং বেড়াতে গেছেন। তিনি বলছিলেন, কোনো রকমে একটি হোটেলে রুম পেয়েছেন। পাঁচ মিনিট দেরি করে গেলে সড়কেই থাকতে হতো। স্টেশন এলাকায় অনেকে গাড়িতে, যাত্রী ছাউনিতে অবস্থান করছেন।

মিনি ম্যারাথনে যোগ দিতে কলকাতায় যাচ্ছিলেন কামরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার বিকেলে শিলং থেকে গুয়াহাটির উদ্দেশে সড়কপথে যাত্রা করেন। কারফিউ জারির কারণে মাঝপথে গাড়িতেই রাত কাটাতে হয়েছে তাকে। শুক্রবার দুপুরের দিকে গুয়াহাটি পৌঁছানোর পর ট্রেনযোগে কলকাতা যাত্রা শুরু করেছেন বলে জানান তিনি। ঢাকা/বকুল