সারা বাংলা

দৃষ্টিনন্দন পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে মুগ্ধ মানুষ

কুষ্টিয়ার দৃষ্টিনন্দন পুলিশ সুপারের কার্যালয় দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন অনেকেই। ছবির মতো সাজানো এ কার্যালয়কে অনেকেই পার্কের সাথে তুলনা করছেন।

পুলিশ সুপারের কার্যালয় এলাকায় প্রবেশ করতেই সৌন্দর্যে বিমোহিত হচ্ছেন দর্শনার্থী। ঢুকেই চোখে পড়বে বাহারি ও নানা জাতের ফুলের সমাহার। দেশি গাঁদা ছাড়াও রং ছড়াচ্ছে বিদেশি কয়েকটি জাতের ফুল। আছে বর্ণিল ঝর্ণাধরা, বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মূর্তি।

আবার পুলিশের লোগোতে যে নৌকা রয়েছে সেই আদলে তৈরি করা হয়েছে চোখ ধাঁধানো নৌকা। পিতলের রংয়ে সারাক্ষণ জ্বলজ্বল করে। পুরো চত্বরটি পটে আঁকা ছবির মতো ছিমছিম গোছানো।

বদলে যাওয়া এই কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয় দেখতে কুষ্টিয়া ছাড়াও আশেপাশের জেলার মানুষ আসছেন। যারা আগে এই কার্যালয়টি দেখেছেন তাদের কাছেও ভবনটি ও ভবনটির সামনের চত্বরটি একেবারেই নতুন মনে হবে। কার্যালয়টিকে বাহারি ও বর্ণিল করতে পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত এর নানা উদ্যোগের প্রশংসা দর্শনার্থীদের মুখে মুখে।

কুষ্টিয়ার পুলিশকে জনমুখী করার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি বন্ধের নানা উদ্যোগের জন্যও বিদায়ী বছরে আলোচিত ছিলেন এই পুলিশ সুপার। পুলিশের চৌকস ও সৎ কর্মকর্তা হিসেবেও একটা পরিচিতি গড়েছেন এসএম তানভীর আরাফাত। সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশের ভাবমুর্তি ফেরাতে যেমন নানা উদ্যোগ নিয়ে প্রশংসিত হন, তেমনি মাদকের বিরুদ্ধে তার যুদ্ধ ছিল সব মহলে আলোচিত।

বলা হচ্ছে, এ পুলিশ সুপার পুলিশকে যেমন বদলে দিয়েছেন তেমনি বাড়িয়েছেন পুলিশ লাইনের সৌন্দর্যও।

পুলিশ সুপারের কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, ‘বিগত এক বছরেই পুলিশ লাইনের পুরো চেহারা আমূল বদলে গেছে। প্রবেশ পথে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন দুটি গেইট। নির্মাণ করা হয়েছে আধুনিক তিনতলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, আধুনিক অস্ত্রাগার, পুলিশ সদস্যদের ব্যারাক, আধুনিক স্যালুটিং ডায়াস, নারী পুলিশের সদস্যদের জন্য ডাইনিংসহ অভ্যন্তরীণ কংক্রিটের সড়ক। আরো বড় কয়েকটি প্রকল্প টেন্ডারের প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলেও জানালেন তারা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘স্যার যোগ দেয়ার পর বিশেষ করে পুলিশ লাইনকে সুসজ্জিত করতে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছেন। বিশেষ করে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনের চত্বর বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন প্রাচীরসহ প্রবেশ গেইট করা হয়েছে। বিশেষ করে পুরো চত্বরটি দেখে যে কোন দর্শনার্থী মুগ্ধ হবে, চোখ জুড়িয়ে যাবে। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের প্রতিটি ফ্লোরই দৃষ্টিনন্দন করে সাজানো হয়েছে। বিভিন্ন মনীষীদের বাণী রয়েছে দ্বিতীয় তলায়। রয়েছে আধুনিক কনফারেন্স কক্ষ। প্রতিটি বিভাগের জন্য আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন কক্ষ রয়েছে।’

পুলিশ লাইনে আসা দর্শনার্থী আরিফ হোসেন বলেন,  ‘কার্যালয়ের সামনের চত্বরটি চোখ ধাঁধানো। শীতকালীন নানা জাতের ফুলের সমাহার রয়েছে। নানা কারুকাজের কারণে পুরো চত্বরটি ফুটে উঠেছে। পাশাপাশি রয়েছে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মুর্তি। সবমিলিয়ে এক কথায় অসাধারণ বলা যায়। এ ধরনের উদ্যোগ নেয়ার জন্য পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানাই।’

পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাত বলেন,  ‘শুধু পুলিশ সুপারের কার্যালয়ই নয় পুরো পুলিশ লাইনকে উন্নয়নের আওতায় আনা হয়েছে। নিচু সড়কগুলো উচু করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের জন্য আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া অনেকগুলো ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। পাশাপাশি কার্যালয়ের মূল চত্বরকে আকর্ষণীয় করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেই সব উদ্যোগের কারণেই পুরো চত্বরটি বর্ণিল হয়ে উঠেছে। দর্শনার্থীসহ সবার কাছেই ভাল লাগবে বলে মনে করি।’

বিগত এক বছরে নানা চ্যালেঞ্জ ছিল উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন,  ‘বিগত বছরে মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশের ভাবমূর্তি ফেরাতে কাজ করেছি। জেলার সাধারণ মানুষ আমার কাজের মূল্যায়ন করবে। আমি ঘটনা ঘটার সাথে সাথে রহস্য উদঘাটনে কাজ করেছি, দ্রুত চার্জশিট দিয়েছি, থানায় এসে কেউ সেবা পায়নি এমনটি আমার জানা মতে হয়নি। তারপরও শতভাগ দিতে পেরেছি বলে মনে হয় না। আগামীতে শতভাগ সেবা দেয়ার চেষ্টা করব। পাশাপাশি পুলিশকে জনমুখী করার জন্যও আরও উদ্যোগ গ্রহণ করব। নতুন বছরে সবার জন্য শুভকামনা।’ কুষ্টিয়া/ কাঞ্চন কুমার/টিপু