সারা বাংলা

বাবার মামলায় আদালতে আসেন না রেজা কিবরিয়াও!

১৫ বছরেও শেষ হয়নি প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যার বিচার। বিচারক না থাকা ও সাক্ষীদের উপস্থিত করতে না পারাই বিলম্ব’র কারণ বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কিশোর কুমার কর।

তিনি বলেন, ‘আদালতে দীর্ঘদিন বিচারক ছিলেন না। এছাড়া যথা সময়ে সব আসামি উপস্থিত না হওয়ায় বিচার কাজ বিলম্ব হচ্ছে। নির্ধারিত তারিখে যদি সকল আসামি আদালতে উপস্থিত হন তাহলে বিচার কাজ দ্রুত হবে। বর্তমানে বিচারক চলে এসেছেন। তাই দ্রুত এই মামলাটি সমাধানের পর্যায়ে যাবে।’

অন্যদিকে মামলার বাদী অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান বলেন, ‘এই মামলার আসামিরা আরো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলারও আসামি। তাদের বিভিন্ন মামলায় সাক্ষ্য ও হাজিরা দিতে হয়। যে কারণে কিবরিয়া হত্যা মামলার তারিখে প্রায়ই তাদেরকে হাজির করা সম্ভব হয় না। আর আসামিদের অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য গ্রহণ করা আইন বহির্ভূত।’

মামলা সম্পর্কে ড. রেজা কিবরিয়ার বিভিন্ন বক্তব্য সম্পর্কে আব্দুল মজিদ খান বলেন, ‘রেজা কিবরিয়াও এই মামলার একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। অনেক সময় তিনিও আদালতে হাজির হন না।’

এছাড়া কিবরিয়া পরিবারের কোন সুনির্দিষ্ট বক্তব্য থাকলে যা মামলার অগ্রগতিতে সহায়ক হবে সে ব্যাপারে পরামর্শ দেয়ারও আহবান জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘এই মামলাটি দেশের একটি স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ মামলা। দেশবাসী এর দ্রুত ফলাফল আশা করে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করে মামলাটি দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নিতে হবে।’

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি বিকেলে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে ঈদ পরবর্তী এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় শাহ এএমএস কিবরিয়া, তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী প্রাণ হারান। আহত হন কমপক্ষে ৭০ নেতাকর্মী।

এ ঘটনার পরদিন ২৮ জানুয়ারি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান এমপি বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে কাজ করে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা। ২০০৭ সালে মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য ফের সিআইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মামলার পঞ্চম তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেরুন্নেসা পারুল সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেটের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিকে গউছ, হুজি নেতা মাওলানা তাজউদ্দিনের ভগ্নিপতি হাফেজ মোঃ ইয়াহিয়াসহ আবু বকর, দেলোয়ার হোসেন, শেখ ফরিদ, আব্দুল জলিল ও মাওলানা শেখ আব্দুস সালামকে অভিযুক্ত করে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন। তাদের বিরুদ্ধে বোমা হামলা ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়।

শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে গণফোরাম এর সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া তার পিতার বিচার নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এই চার্জশিট মানিনা। বিচার যথাযথভাবে হচ্ছে না।’

তবে যদি ক্ষমতার পরিবর্তন হয় তাহলে তার পিতার বিচার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। মামুন/টিপু