সারা বাংলা

হিম উপেক্ষা করে কবি গানে মুগ্ধ শ্রোতা

মাঘের শীত উপেক্ষা করে মঞ্চের সামনে উৎসুক দর্শকের ভিড়।  মঞ্চে জমে উঠেছে দুই কবিয়ালের তর্ক যুদ্ধ।  গানে গানে একে অন‌্যকে আক্রমণ করছেন তারা।  খণ্ডাচ্ছেন পরস্পরের যুক্তি।  পাল্টা যুক্তিতে কেউ কাউকে নাহি ছাড়ে সমান সমান।  আর তাতেই মন্ত্রমুগ্ধ শ্রোতা!

কবি গানের এমন দৃশ্য চিরকালীন। যদিও সময়ের সঙ্গে কবিগান গ্রামবাংলা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে।  কিন্তু তারপরও শিকড়সন্ধানী কিছু মানুষ এখনও ফিরে যেতে চান সোনালী অতীতে।  কবি গানের মধ‌্যেই খুঁজে বেড়ান আপন সংস্কৃতি।  মনের আনন্দ।  তেমনই কিছু মানুষের উদ‌্যোগে গত শুক্রবার রাতে গোপালগঞ্জ জেলার সরকারী বঙ্গবন্ধু কলেজে কবি গানের আয়োজন করা হয়।  যদিও এর নেপথ‌্যে উপলক্ষ‌্য ছিল সরস্বতী পূজা।  পূজা উদযাপন কমিটির আহ্বানে এ দিন গান পরিবেশন করেন প্রখ্যাত কবিয়াল যশোরের সঞ্জয় সরকার ও গোপালগঞ্জের স্বপন সরকার।  দুজনের স্বতঃস্ফূর্ত সুরেলা যুক্তি-তর্কে প্রাঙ্গণ মেতে ওঠে।  উপস্থিত হন বাগেরহাট, পিরোজপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে বিপুলসংখ্যক শ্রোতা।  তরুণ প্রজন্মের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

এক সময় কবি বিজয় সরকারের গান মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনতেন এ অঞ্চলের মানুষ।  তাদের বিনোদনের একটি বড় মাধ্যম ছিল কবি, জারি, সারি গান।  কালের বিবর্তনে এসব গানের শ্রোতা একদিকে যেমন কমেছে, তেমনি গায়কও কমেছে।  কবিয়াল সঞ্জয় সরকার বলেন, কবি গান হলো বাংলার মানুষের আবেগ, ধর্ম, চেতনা।  কবিয়াল স্বপন সরকার বলেন, সকল ধর্মের মানুষ কবিগান শোনেন। সবাই এর মধ্যে আধ‌্যাত্মিক চেতনার খোরাক পান।

প্রথমবারের মতো কবিগান শুনতে আসা শম্পা সাহা বলেন, কবিগান ধর্ম-বর্ণ ছাড়িয়ে মানবতার কথা বলে।  ঐতিহ্যবাহী এই গান ধরে রাখতে সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া উচিত। গোপালগঞ্জ/তারা