সারা বাংলা

মায়ের ভালোবাসা

সন্তানের জীবনে মায়ের অভাব পূরণ হবার নয়। মানুষ, পশুপাখি সবার জন্যই কথাটি সত্য। মায়ের ভালোবাসার তুলনা হয় না। সন্তানের জন্য তার হৃদয় সবসময় কাঁদে। তার কাছে সন্তানভেদ নেই। এমনকি পোষা ছাগলছানাও যখন ক্ষুধার্ত হয়ে ডাকে তখন মায়ের মন বিচলিত হয়।

এ কথার প্রমাণ পাওয়া গেল আমেনা বেগমের (৫৫) ভালোবাসায়। সুখী এবং সাথী দুই ছাগলছানা। জন্মের চার দিন পর মা ছাগলটি মারা যায়। ফলে দুই ছানার বেঁচে থাকাটাই কঠিন হয়ে পড়ে। এমন সময় মায়ের মমতা নিয়ে এগিয়ে আসেন গৃহিণী আমেনা বেগম। তিনি এক অর্থে দুধ মায়ের দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিদিন বাইরে থেকে দুধ কিনে আনেন ছানা দুটিকে পান করানোর জন্য। ধীরে ধীরে ছানা দুটি শরীরে বল ফিরে পাচ্ছে।  

ঝিনাইদহ জেলার ফাজিলপুর গ্রামে আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে ছানা দুটির জন্ম প্রায় একমাস আগে। আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী আমেনা বেগম জানান, মা ছাগলটা একদিন সন্ধ্যায় জ্বরে কাঁপতে শুরু করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রাতে মারা যায়। এরপর বাচ্চা দুটি খুব অসহায় হয়ে পড়ে। সবাই ধরেই নিয়েছিল বাচ্চা দুটিও হয়তো বাঁচবে না। কিন্তু এখন ওরা ভালো আছে।

বাচ্চাদের জন্য আলাদা যত্ন নিতে হয় জানিয়ে আমেনা বেগম বলেন, বেলা ১১টার দিকে এবং বিকেলে ভাতের মাড় খেতে দেই। এছাড়া সকাল-সন্ধ্যা দুধ খাওয়াই। এরপর ঘরে তুলে রাখি। শীতের রাত। গরমের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করে দিয়েছি। মশা যাতে না কামড়ায় এজন্য মশারীর ব্যবস্থাও আছে।

ছাগলছানা দুটির জন্য আমেনা বেগমের বড় মায়া। তার চার ছেলে। তাদের বড় করেছেন। এখন তারা নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়ে সংসার করছে। মায়ের দায়িত্ব প্রায় শেষ। বলতে গেলে আমেনা বেগমের এখন অবসর জীবন। ঠিক এমন সময় ছাগলছানা দুটি বড় করার দায়িত্ব পেয়েছেন। তবে ছাগলছানা দুটি খুবই চঞ্চল বলে জানিয়েছেন তিনি। 

 

ঝিনাইদহ/তারা