সারা বাংলা

কাটা পড়ছে এক হাজার শতবর্ষী গাছ!

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নিরাপত্তা বেস্টনী তৈরী করতে কাটা পড়ছে পাকশী এলাকার শতবর্ষী এক হাজারের বেশি গাছ।

উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য জমি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে হস্তান্তর করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। জমিতে থাকা অনেকগুলো গাছে লাল কালি দিয়ে চিহ্নিত করে দেয়া হয়েছে।

গাছ কাটার সিদ্ধান্তে হতাশ স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশবিদরা।

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ এইচ এম মনিরুজ্জামান মামুন রাইজিংবিডিকে বলেন, ব্রিটিশ বিরোধী, ভাষা ও স্বাধীনতার আন্দোলনসহ বহু ইতিহাস আর ঐতিহ্যের কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে পাকশীর শতবর্ষী এক হাজারের বেশি গাছ। রেইনট্রি কড়ই, শিল কড়ই, সেগুন, মেহগুনি, শাল গাছের পাশাপাশি রয়েছে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচুড়া, কাঞ্চন বৃক্ষ, আম, জাম, কাঁঠাল, বেল, সফেদা, তেঁতুল, বাদামসহ বিভিন্ন ধরনের প্রায় ৩০ জাতের বনজ ও ফলজ গাছ। যা তৈরী করেছে একটি সবুজ বেস্টনী। অথচ রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নিরাপত্তা বেস্টনী তৈরীর জন্য জমি বরাদ্দ দেয়ায় কাটা পড়ছে এসব শতবর্ষী হাজারো গাছ।

তিনি আরো বলেন, গাছগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা গেলে উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্থ হবে না। এতে টিকে থাকবে শতবর্ষের ঐতিহ্যও।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা, ছায়াদান, সৌন্দর্য বর্ধনসহ নানাভাবে উপকারে আসা গাছগুলো কাটার সিদ্ধান্তে হতাশা ব্যক্ত করেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা হলে তারা জানান, গাছগুলো এ অঞ্চলের মানুষের পরম বন্ধু। নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবুজ বেস্টনী তৈরী করে এখানকার মানুষকে রক্ষা করেছে। এখন উন্নয়ন প্রকল্পের নামে গাছগুলো যদি কাটা পড়ে তাহলে এলাকাবাসীর দুর্ভাগ্য ছাড়া কিছু নয়।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে রাজশাহী বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ জানান, রুপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যে সরকারের নির্দেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে ১০৪ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নীতিমালার মধ্যেই আছে যে, ঐতিহ্য বা প্রকৃতিকে রক্ষা করে কাজ করার। সে কারণে তারা শতবর্ষী গাছগুলোকে যতটুকু সম্ভব সংরক্ষণ করেই সব কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন।

 

পাবনা/জেনিস