সন্ধ্যা কুমারী মোহন্তর বয়স ৫০ বছর পেরিয়েছে। এ বয়সে স্বামী-সন্তান, নাতি-নাতনিদের নিয়ে সময় কাটানোর কথা ছিল তার। তবে সে সুযোগ নেই সন্ধ্যা কুমারীর। অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় তাকে।
নওগাঁর একমাত্র নারী অটোরিকশাচালক সন্ধ্যা কুমারী। জন্মতারিখ জানা নেই তার। স্বাধীনতাযুদ্ধের আগে এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম হয়েছিল সন্ধ্যার। ছোটবেলাতেই বাবাকে হারিয়েছেন। দুই ভাই বিয়ে করে আলাদা সংসার পেতেছেন। বিধবা মায়ের দায়িত্ব তার কাঁধে। বিয়ের খরচ যোগাতে বিক্রি করতে হতো একমাত্র বসতভিটা। তাই বিয়ে করা হয়ে ওঠেনি সন্ধ্যা কুমারীর।
সন্ধ্যা কুমারী সংসার চালাতে বেছে নেন অটোরিকশা চালানোর কাজ। এতে শুরুতে অনেক প্রতিকূলতা ও সমালচনার মুখে পড়তে হয় তাকে। তবে দমে যাননি তিনি। অটোরিকশার হ্যান্ডেলে হাত রেখে চালিয়ে যাচ্ছেন জীবনযুদ্ধ। এখন তিনি অনেকের অনুপ্রেরণা।
সন্ধ্যা কুমারী মোহন্ত জানান, কাজ পাওয়ার জন্য অনেকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। পরে বাধ্য হয়ে অটোরিকশা চালানোকে পেশা হিসেবে নেন। সৎ উপায়ে উপার্জন করে সংসার চালাতে পেরে তিনি খুশি।
আরেক অটোরিকশাচালক আমিনুল বলেন, সন্ধ্যা কুমারী আমাদের সাথেই গাড়ি চালান। এতে আমাদের বা তার কোনো সমস্যা হয় না। বরং আমরা তাকে সহযোগিতা করি। তিনি ইচ্ছেমতো যেকোনো জায়গায় যাত্রী নিয়ে যেতে পারেন। তাকে কোনো প্রকার চাঁদা দিতে হয় না।
অটোরিকশার যাত্রী কামরুন নাহার বলেন, একজন নারী পুরুষদের পাশাপাশি গাড়ি চালাচ্ছেন, এটা লজ্জার বিষয় নয়। তাকে নিয়ে গর্ব করা যায়। তার কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে।
নওগাঁ/সাজু/রফিক