সারা বাংলা

টাঙ্গাইলের সখীপুরকে হোম কোয়ারেন্টাইন ঘোষণা

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমাতে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলাকে হোম কোয়ারেন্টাইন ঘোষণা করা হয়েছে।

বুধবার (২৫ মার্চ) সকাল থেকে স্থানীয় প্রশাসনের তত্বাবধানে এই হোম কোয়ারেন্টাইনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমাউল হুসনা লিজার সভাপতিত্বে পুরো উপজেলাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে আনার সিদ্ধান্ত জানান।

সেই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সকাল থেকেই উপজেলার পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।

জনগণের প্রবেশ ঠেকাতে সকাল থেকেই সখীপুর উপজেলায় প্রবেশের ২৩টি স্থানে সড়কে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। ওই ২৩ স্থানে সার্বক্ষণিক পুলিশ ও গ্রাম পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। শুধুমাত্র ওষুধ, কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান খোলা রয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৬৪৭ জন প্রবাসী সখীপুরে ফিরেছেন। এদের মধ্যে ৩২৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। কিন্তু সরকারের কঠোর নির্দেশের পরও অনেকেই হোম কোয়ারেন্টাইন মানছেন না। তারা নিয়ম না মেনে অবাধে ঘোরাঘুরি করায় এ অঞ্চলে করোনাভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে পুরো সখীপুর উপজেলাকেই হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সখীপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ আমির হোসেন জানান, পুরো উপজেলাকে হোম কোয়ারেন্টাইন করায় উপজেলার সব বাজারের দোকানপাট ও চলাফেরা বন্ধ থাকবে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হবে না। অন্যদিকে অন্য উপজেলা থেকে কেউ যাতে সখীপুরে না ঢুকতে পারে সেজন্য ২৩টি সীমান্ত পয়েন্টে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়াও সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমাউল হুসনা লিজা রাইজিংবিডিকে জানান, গত কয়েক দিনে এই উপজেলায় ৬৪৭ জন প্রবাসী এসেছেন। তাদের বেশিরভাগকেই পাসপোর্টে উল্লেখিত ঠিকানায় পাওয়া যাচ্ছে না। এসব প্রবাসীদের মধ্যে ৩২৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় আনা হয়েছে। তাছাড়া অন্য উপজেলার বিদেশ ফেরতরাও এই উপজেলায় এসে লুকিয়ে থাকছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ আছে, কুমিল্লা থেকে এক প্রবাসী দেশে ফিরে সখীপুরে লুকিয়ে আছেন। তাকে সবাই লাগেজ নিয়ে আসতে দেখেছে, কিন্তু তারপর আর তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির জরুরি সভা করে সখীপুর উপজেলায় যেনো করোনাভাইরাস সংক্রমিত না হয় এজন্য পুরো উপজেলাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ সময়ে কোনো গণ পরিবহনকে সখীপুরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কোনো এম্বুলেন্সও যদি প্রবেশ করতে চায়, তাহলে রোগীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে হবে। সাধারণ জনগণ জরুরি প্রয়োজন যেমন হাট-বাজার, ওষুধের দোকানে যাওয়া ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না। শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যমকর্মী ও পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করতে পারবে। শাহরিয়ার সিফাত/সনি