সারা বাংলা

ছুটি মেলেনি চা শ্রমিকদের

বাংলাদেশ চা বোর্ডের নিবন্ধিত ১৬৭টি চা বাগানে কাজ করেন প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার শ্রমিক। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির সময়ে অন্য অনেক প্রতিষ্ঠানে ছুটি দেওয়া হলেও এখনো ছুটি পাননি চা শ্রমিকরা।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার একাধিক চা বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার অধিকাংশ চা বাগানে করোনাভাইরাসের বিষয়ে তেমন সচেতনতা নেই। কিছু বাগানে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়েছে। বিতরণ করা হয়েছে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার। তবে শ্রমিকদের ছুটি দেয়নি বাগান কর্তৃপক্ষ।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এ সময়ে চা বাগানগুলো বন্ধ রাখলে ভালো হতো বলে মনে করেন শ্রমিকরা।

এদিকে, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে কমলগঞ্জ উপজেলার চা বাগানগুলোতে থাকা সব দেশীয় মদের পাট্টা (দোকান) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেছেন, ‘এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। করোনাভাইরাস যাতে চা বাগান এলাকায় না ছড়ায়, সেজন্য বাগান এলাকায় বহিরাগত মানুষের চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

চা শ্রমিকের সন্তানদের সংগঠন জাগরণ যুব ফোরামের সভাপতি মোহন রবিদাস বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার সারা দেশে কিছুদিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করেছে। অথচ চা শ্রমিকদের এ ছুটির বাইরে রাখা হয়েছে। এটা চা শ্রমিকদের প্রতি সরকার ও চা কোম্পানিগুলোর অবহেলা।’

তিনি বলেন, ‘অবিলম্বে সব চা বাগানে মজুরিসহ ছুটি দেওয়া হোক। অভিযান চালিয়ে চা বাগানগুলোতে মদের পাট্টা বন্ধ করা হোক। চা বাগানে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে চেকপোস্ট বসানো হোক।’

করোনাভাইরাসের হাত থেকে চা শ্রমিকদের রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান তিনি।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রামভজন কৈরি বলেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সারা দেশের মতো চা শ্রমিকদেরও এই সরকারি ছুটির অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে শ্রম মন্ত্রণালয় ও চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশের চা সংসদের কাছে লিখিত আবেদন পাঠানো হয়েছে।

অপরদিকে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য সচেতনতার ক্ষেত্রে ছুটি গুরুত্বপূর্ণ, এ দাবি করে কমলগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি চা বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করে স্বেচ্ছায় ছুটি ভোগ করেছেন।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালির (অঞ্চল) কার্যকরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত সরকারি ছুটি ভোগ করতেই এই কর্মবিরতি। এই কর্মবিরতিই সরকারি ছুটি হিসেবে ভোগ করছেন চা শ্রমিকরা। ’

শুক্রবার (২৭ মার্চ) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য শমশেরনগর, কানিহাটি, দেওছড়া, বাঘিছড়া ও ডবলছড়া চা বাগানের শ্রমিকরা ছুটি ভোগ করবেন। মৌলভীবাজার/সাইফুল্লাহ/রফিক