সারা বাংলা

হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতেই মারা যায় রিফাত!

এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল। শুধু ঘোরাঘুরি। কেউ ভর্তি করে না। শুধু রেফার করে। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে বিনা চিকিৎসাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত ছোট্ট রিফাত।

মঙ্গলবারের (৩১ মার্চ) এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

রিফাত খুলনার খালিশপুর হাউজিং বিহারি ক্যাম্প-১ এর বাসিন্দা মো. কাশেমের ছেলে। খালিশপুর ওব্যাট প্রাইমারি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল সে।

রিফাতের নানা মো. কলিমুদ্দীন জানান, তার নাতিকে মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক নেই বলে তাকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। কাগজে ওষুধ লিখে খাওয়ানোর জন্য বলা হয়। বেশি সমস্যা হলে বুধবার হাসপাতালে নিতে বলা হয়। এরপর তিনি রিফাতকে নিয়ে খালিশপুর ক্লিনিকে যান। সেখানে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ না করেই বলে, এখানে কোনো চিকিৎসক নেই। রোগী ভর্তি করা যাবে না। এরপর তাদের পরামর্শে রিফাতকে সার্জিক্যাল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেও তাকে ভর্তি না নিয়ে ময়লাপোতার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারাও রোগীকে ভর্তি না নিয়ে ফেরত পাঠান। এভাবে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মারা যায় রিফাত।

খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. শেখ আতিয়ার রহমান বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে চিকিৎসকরা চাপের মধ্যে আছেন। তবে, সাধারণ রোগীরা যথাযথ চিকিৎসাসেবা পাবেন না, সেরকম পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। এ বিষয়ে আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।’

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, ‘কোনো হাসপাতালে সাধারণ রোগীর চিকিৎসাসেবা বন্ধ করা হয়নি। তবে, হাসপাতাল ও ক্লিনিকে করোনার কারণে মানবিকতা কমছে। দায়বদ্ধতা থেকে এ রোগীর চিকিৎসাসেবা দেয়া উচিৎ ছিল। কেন রোগীকে যথাযথ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হলো না, সে বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে দেখা হবে।’

খালিশপুর ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, লিভার সিরোসিস রোগীর জন্য আইসিইউ দরকার হয়। জটিল অবস্থায় থাকার কারণেই ওই রোগীকে ভর্তি না নিয়ে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে সার্জিক্যাল হাসপাতালে রেফার করেছেন হয়তো। আমাদের ক্লিনিকের নিয়ম মেনে এটা হতেই পারে। নূরুজ্জামান/রফিক