সারা বাংলা

শহরের মতো থমকে গেছে গ্রামও

কোথাও কেউ নেই। নেই মানুষের আনাগোনা। নিস্তব্ধতা এনে দিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস! কঠিন এই সময়টুকু কাটিয়ে উঠতে কতদিন লাগতে পারে জানেন না কেউই।

প্রতিদিনই বিশ্বব্যাপী এ মারণ ভাইরাসে মৃত্যু ও সংক্রমণের খবর। বাংলাদেশেও হানা দিয়েছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তাই সবাই কর্মব্যস্ততা ছেড়ে আপন নীড়ে স্বেচ্ছাবন্দি। রাজধানীসহ সারাদেশের শহরগুলো এখন প্রায় ফাঁকা।

একই অবস্থা মৌলভীবাজার শহরের। শুধু শহর নয়, গ্রাম-গঞ্জেও নেই মানুষের আনাগোনা। এ ভাইরাস সবাইকে থমকে দিয়েছে। গ্রামের বাড়িতে এলেও কেউই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না।

সাধারণ ছুটি পাওয়ায় সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন গ্রামে। সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছে এক যুদ্ধাবস্থা। এ যুদ্ধ প্রাণঘাতী করোনার বিরুদ্ধে। আর এ যুদ্ধ চলছে ঘরে বসে।

একসময় যে গ্রাম থাকতো প্রাণচঞ্চল, যে গ্রামও থমথমে। গ্রামের মানুষরাও এখন আগের চেয়ে অনেক সচেতন। নেই আগের মতো জটলা বেঁধে গল্প-আড্ডা। মানুষের চলাচল নেই। যে যাকে যেখানেই পাচ্ছেন, করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতার বাণী শোনাচ্ছেন। জানান দিচ্ছেন আতঙ্কিত না হতে।

গ্রামে দেখা গেছে, করোনা আতঙ্কে কেউ একত্রিত হচ্ছেন না। যে যার মতো পৃথকভাবে চলাফেরা করছেন। হাওরে বা খেলার মাঠে নেই খেলাধুলাও। অভিভাবকরা শিশু-কিশোরদের বাইরে বের হতে দিচ্ছেন না। সবাই নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। বলতে গেলে তারাও হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন।

কথা হয় মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পাতিলাসাঙ্গন গ্রামের আবুল হোসেনের সঙ্গে। ঢাকার উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে পড়ালেখা করেন তিনি। আবুল হোসেন বলেন, ‘আমাদের ভার্সিটি বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে চলে এসেছি। এ রকম ছুটি সবসময় আনন্দের হলেও এবার তা বিষন্নতার। সাধারণত জরুরি কোনো কাজ ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছি না। বাড়ির সবাইকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য বলছি।'

একই গ্রামের কামরুল হাসান মাছুমও উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘প্রতিবার বাড়িতে এলে সবার সঙ্গে অনেক আড্ডা দিয়ে সময় কাটতো। বেশ খেলাধুলাও করা যেত। কিন্তু এবার সেই আনন্দটুকু করোনাভাইরাস যেন ধুয়ে নিয়ে গেছে। তবে সবসময় সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করছি। আমার বিশ্বাস খুব তাড়াতাড়ি এই মহামারি ভাইরাস থেকে পৃথিবী মুক্তি পাবে এবং আমরাও আমাদের প্রাণের ক্যাম্পাসে ফিরে যাব।' মৌলভীবাজার/টিপু