সারা বাংলা

করোনা সন্দেহে ছাড়তে হলো পৈ‌ত্রিক ভিটা

সামান্য জ্বর-কাশি থাকায় করোনা সন্দেহে প্রথমে কর্মস্থল থেকে বিতাড়িত হন মজিবুর রহমান (৬০)। পরে নিজের পৈত্রিক ভিটা এবং শেষ পর্যন্ত নিজের একমাত্র সন্তানের বাড়ি থেকেও বিতাড়িত হলেন তিনি।

বর্তমানে তিনি চাঁদপুর সদর হাসপাতালে আইসোলেশন বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন।

জানা যায়, মজিবুর রহমান ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে একটি কারখানায় কাজ করতেন। কিছুদিন আগে জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হন। ভালো না হওয়ায় করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে সেখানকার লোকজন তাকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

শনিবার (১১ এপ্রিল) সকালে তিনি মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের উত্তর গোপালকান্দি গ্রামে নিজ বাড়িতে ফেরেন। তার স্ত্রী জীবিত নেই। একমাত্র সন্তান মেয়ে। তার বিয়ে হয়েছে একই এলাকার মুক্তিরকান্দি গ্রামে।

নিজ বাড়িতে ছোট্ট একটি ঘর আছে মজিবুরের। করোনা কবলিত ঢাকা থেকে এসেছেন এবং জ্বর-কাশি থাকায় বাড়ির লোকজন তাকে নিজ ঘরে থাকতে বাধা দেয়। বহু আকুতি-মিনতি করেও পৈত্রিক ভিটেয় বাড়িতে থাকার সুযোগ হয়নি তার।

নিরূপায় হয়ে মজিবুর রহমান চলে যান তার মেয়ের শ্বশুর বাড়ি একই ইউনিয়নের মুক্তিরকান্দি গ্রামে। কিন্তু করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে সেখানেও ঠাঁই হয়নি তার। এলাকার মানুষ তাকে মেয়ের বাড়িতে থাকতে দেয়নি।

মুক্তিরকান্দি গ্রামের লোকজন তাকে স্থানীয় হাজী মার্কেটের পাশের একটি ঈদগাহ মাঠে ফেলে রাখে। পরে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুশরাত জাহান মিথেনকে সংবাদ পাঠায়।

খবর পেয়ে ডা. নুশরাত জাহান মিথেন তাৎক্ষণিক চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাখাওয়াত উল্লাহকে বিষয়টি জানান। সিভিলি সার্জনের নির্দেশে জরুরি অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে মজিবুর রহমানকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালে নিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

চাঁদপুর সদর হাসপাতালের আরএমও ও করোনা বিষয়ক ফোকালপার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, ‘বৃদ্ধ মজিবুর রহমানের জ্বর ও কাশি তেমন গুরুতর নয়। করোনায় আক্রান্তের উপসর্গও তেমন নেই। তারপরও যেহেতু তিনি করোনা কবলিত এলাকা থেকে এসেছেন। সেজন্য তাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। রোববার সকালে তার নমুনা সংগ্রহ করা হবে। অমরেশ দত্ত জয়/সনি/নাসিম