সারা বাংলা

বালু ব্যবসায়ীদের কারণে আতঙ্কে আত্রাই পাড়ের মানুষ

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার ছিলিমপুর গ্রামের কোল ঘেঁষে বয়ে চলেছে আত্রাই নদী। সাধারণ মানুষের অনেক জমি বিলীন হয়েছে এই নদীগর্ভে। নদী ভাঙ্গন এখানে নদীপাড়ের মানুষের দুঃখ।

বিভিন্ন দুর্যোগ ও বন্যায় নদী ভাঙ্গনের কারণে আত্রাই তীরবর্তী রাঙ্গামাটি, ছিলিমপুর, নন্দনপুর, বস্তাবরসহ নদী সংলগ্ন গ্রামের মানুষ ভীষণ কষ্টে জীবন যাপন করছেন।

এমন পরিস্থিতিতে প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী নদীপাড়ের জমি খনন করে ইচ্ছেমতো মাটি-বালি বিক্রি করে চলেছেন। যা আগামীতে নদী ভাঙন বাড়িয়ে দেবে এবং নদীপাড়ের বাসিন্দাদের জন্য হয়ে উঠবে ভয়াবহ ক্ষতির কারণ। ক্ষতির মুখে পড়বে নদী পাড়ে সৃষ্ট বনবিভাগের সামাজিক বনায়নও। অথচ বিষয়টিতে প্রশাসন বা বনবিভাগের তেমন কোন সাড়াই নেই।

সরেজমিনে গেলে জানা যায়, এখানে নদীপাড়ের পতিত জমিতে রবিশস্য আবাদের নামে লিজ নিয়েছেন স্থানীয় উদয়শ্রী বেড়ীতলা গ্রামের প্রভাবশালী জামাল উদ্দিন। বর্তমানে তিনি সেই জমিতে চাষাবাদের পরিবর্তে জমিটি নিজের দাবি করে ইচ্ছেমত মাটি খনন করছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, খাস জমির মাটি খনন করায় বনবিভাগের গাছের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি প্রশাসনের নাকের ডগায় দিনের পর দিন অবৈধভাবে বালি-মাটি উত্তোলন করে বিক্রির কারণে পুরো এলাকাকেই হুমকির মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।

কেবল জামালই নন, ঠিক একইভাবে উপজেলার ছিলিমপুর গ্রামের মানিক হোসেনও বিভিন্ন জায়গা ক্ষতি করে গভীর গর্ত করে মাটি-বালি খনন করে অবৈধ উপার্জন করছেন। এই অবৈধ খনন কাজ অব্যাহত থাকলে এলাকার শত শত ঘরবাড়ি ও জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হবে বলে এলাকাবাসি মনে করেন।

এবিষয়ে জামাল উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ঘটনাস্থলে আসতে অস্বীকার করে বলেন, ‘জমিটি আমার বাপের। আপনারা ছবি তুলে কি করবেন। যত রিপোর্ট- আছে করেন, তাতে আমার কোন সমস্যা নেই।'

স্থানীয় ছিলিমপুর গ্রামের কাশেম আলী ও নন্দনপুর গ্রামের দইমদ্দিনসহ অন্যান্য গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে বালি-মাটি উত্তোলন করতে থাকলে আসন্ন বর্ষাকালে নদীর পাড়ের বাড়িঘরের অপূরণীয় ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে।

এব্যপারে উপজেলা বনবিট কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘পতিত ওই জমিতে সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে গাছ রোপণ করা হয়েছে। সেখানে উপকারভোগীরা পরিচর্যা ও দেখভাল করেন কিন্তু জোরকরে অবৈধ ভাবে গভীর গর্ত করে যে খনন কাজ চালাচ্ছে, তাতে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে বনবিভাগ ও এলাকার সাধারণ মানুষ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার গনপতি রায় বলেন, ‘আমি সেখানে তদন্তের জন্য প্রতিনিধি পাঠাচ্ছি, বনবিভাগ বা সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 

অরিন্দম/টিপু