সারা বাংলা

করোনায় মুজিবনগর পর্যটকশূন‌্য, সহস্রাধিক মানুষ বেকার

করোনাভাইরাসের কারণে পর্যটকশূন‌্য হয়ে পড়েছে মেহেরপুরের ঐতিহাসিক মুজিবনগর। লোকসমাগম না থাকায় দোকানপাট, হোটেল, বেসরকারি পার্ক ও চিড়িয়াখানা বন্ধ হয়ে গেছে। পর্যটকবাহী রিকসা-ভ্যানও চলাচল করছে না।

এতে মুজিবনগরকে কেন্দ্র করে জীবীকা নির্বাহ করা সহস্রাধিক মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে এদের অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছে। পাশাপাশি সরকারও হারাচ্ছে রাজস্ব।

মুজিবনগর পিকনিক স্পটের কেয়ারটেকার আলামিন হোসেন জানান, নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০টি এবং অন্যান্য সময় প্রায় প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি বাসভর্তি দর্শনার্থী এখানে পিকনিক কিংবা শিক্ষা সফরে আসত। এছাড়া সারাবছর মাইক্রোবাস, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলযোগে মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার মানুষ সময় কাটাতে আসত ঐতিহাসিক এ মুজিবনগর কমপ্লেক্সে। কিন্তু বর্তমানে এখানে কোনো দর্শনার্থী নেই।

মুজিবনগর গণপূর্ত বিভাগের রেস্টহাউজের কেয়ারটেকার চাঁন্দু বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের স্থানাপনাসহ বিভিন্ন স্থাপনাকে ঘিরে সারাবছর মুজিবনগর কমপ্লেক্সে লোকসমাগম থাকলেও করোনাভাইরাসের কারণে এখন একেবারে ফাঁকা।’

জেলা পরিষদের রেস্ট হাউজ সূর্যোদয়ের কেয়ার টেকার রেজাউল হক জানান, অন্য সময় মুজিবনগর কমপ্লেক্সে আসা ভিআইপি দর্শনার্থীদের উপস্থিতির কারণে ব্যস্ত থাকতে হতো। করোনাভাইরাসের কারণে এখন অলস সময় কাটাতে হচ্ছে।

মুজিবনগর অনন্যা পার্কের মালিক হাসানুজ্জামান লাল্টু বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে মুজিবনগর এখন লোকশূন্য। উপার্জন নেই। পার্কের জন্য প্রয়োজনীয় লোকবলের বেতন দেব কীভাবে?’

মুজিবনগর মনোরমা চিড়িয়াখানার মালিক এনামুল হক বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে মুজিবনগর এখন ফাঁকা। কীভাবে পশু-পাখিদের খাওয়াবো? আর কীভাবে কর্মচারীদের বেতন দেব?’

ভ্যান চালক আব্দুল মালেক বলেন, ‘এলাকার দুই শতাধিক ইঞ্জিন চালিত নছিমন-করিমন, আলগামন, আলমসাধু এবং ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, রিকসা ও ভ্যান চালক মুজিবনগরকে ঘিরে জীবীকা নির্বাহ করে। ভাইরাসের জন্য মুজিবনগরে লোক সমাগম বন্ধ থাকায় সবাই বিপদে পড়েছে।’

মুজিবনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ মুন্সি ওমর ফারুক প্রিন্স বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে পিকনিক স্পটসহ মুজিবনগর কমপ্লেক্স বন্ধ থাকায় এর সাথে সংশ্লিষ্ট হাজারো পরিবার অনাহারে অর্ধহারে দিন কাটাচ্ছে। সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব। ঐতিহাসিক মুজিবনগর কমপ্লেক্সের পাশাপাশি দর্শনীয় স্থান মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি নীলকুঠি ও গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া কুঠিতে লোক সমাগম নেই।’

মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উসমান গনি জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে মুজিবনগর কমপ্লেক্সে জনসমাবেশ বন্ধ এবং এলাকার দুজনের করোনা পজেটিভ হওয়ায় মুজিবনগর উপজেলাকে লকডাউন করা হয়েছে। করোনার প্রকোপ কমে গেলে আবার সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। মেহেরপুর/সনি