সারা বাংলা

সবজি সিদ্ধ খেয়েই রোজা রাখছেন লালবানু

গত দুইদিন ধরে সবজি সিদ্ধ করে খেয়ে রোজা রেখেছেন সুনামগঞ্জ পৌরশহরের ষোলঘর এলাকার লালবানু (৫০)।

ঘরে অসুস্থ প্রতিবন্ধী স্বামী। পরিবারে রয়েছে ছোট ছোট এক মেয়ে ও এক ছেলে। স্বামীর চিকিৎসা ও সংসার সচল রাখতে অন্যের বাসায় কাজ করতেন। এভাবে তবু দু'মুঠো খাবারের যোগান হচ্ছিল। কিন্তু করোনা মহামারি আসার পর সব এলোমেলো হয়ে গেল।

বন্ধ হয়ে গেছে বাসার কাজ। ফলে রোজগারও বন্ধ। এতে পুরো পরিবারই বেকায়দায়। সব দায় যেন লালবানুর।

সুনামগঞ্জ পৌর বাজারে কথা হয় লালবানুর সাথে। লালবানু জানান, স্বামী অসুস্থ হওয়ার পর থেকে অন্যের বাসায় কাজ করে কোনো মতে চলছিল সংসার। কিন্তু করোনাভাইরাস আসার পর থেকে কাজ করা বন্ধ করে দেয় বাসার মালিক। এরপর অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসা এবং স্বামী-সন্তানদের মুখের আহার জোগাতে নেমে আসেন রাস্তায়। সকাল হলেই ত্রাণের সন্ধানে বের হন। ত্রাণ না পেলে বাজারে সবজি কুড়াতে যান। প্রতিদিন সকাল ৮ টার পর ষোলঘর এলাকা থেকে শুরু করে ষোলঘর পয়েন্ট, উকিলপাড়া সবজি বাজার, মধ্যেবাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে সবজি কুড়াতে থাকেন। বিকেল পর্যন্ত কুড়িয়ে যে সবজি সংগ্রহ হয় তা বিক্রি করে যে টাকা পান,  চাল-ডাল কিনে বাসায় ফেরেন। আর যেদিন সবজি বিক্রি করতে পারেন না ওই দিন সবজি সিদ্ধ করে খেয়ে জীবন বাঁচান।

গত দু’দিন বুধবার (৫ মে) ও আজ বৃহস্পতিবার সবজি সিদ্ধ করে খেয়ে রোজা রেখেছেন।

লালবানু বলেন, ‘সরকার ত্রাণ দেয়, টাকা দেয় কিন্তু আমাদেরকে কেউ দেখে না। আমরা এগুলো থেকে বঞ্চিত।'

লালবানু অনুরোধ জানান, তাদের মতো অসহায়দের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ যেন সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত এর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘পুরো সুনামগঞ্জ পৌরশহরের অসহায়, হতদরিদ্র ও দিনমজুর পরিবারের মধ্যে একবার করে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। আমরা বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমেও ত্রাণ সামগ্রী দিচ্ছি। লালবানু হয়তো ত্রাণ পেয়েছেন। তারপরও বিষয়টি আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। এরকম অসহায় পরিবারের পাশে আমরা সবসময় আছি।'

 

সুনামগঞ্জ/টিপু