সারা বাংলা

পিঠা বিক্রি বন্ধ, তাই খাবারও নেই সেই কমলা বানুর ঘরে

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ জংশনে চিতই পিঠা ও সিদ্ধ ডিম বিক্রি করতেন সত্তরোর্ধ্ব কমলা বানু। করোনা আসার পর এসব বিক্রি বন্ধ রয়েছে। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় জংশনে লোকজনও নেই। মেয়ের চাকরির জমানো টাকায় তিনি চলেছেন। এখন এ টাকাও শেষ। এ পর্যন্ত তাকে কেউ ত্রাণ দেয়নি বলে তার অভিযোগ।

এ পবিত্র রমজানে তিনি খেয়ে না খেয়ে রোজা পালন করছেন। ৮ মে পর্যন্ত তার কাছে সরকারি কোন ত্রাণ পৌঁছায়নি।

এদিকে রেলওয়ে কলোনিতে থাকার ঘরটিও বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। নেই খাবার, আবার থাকার জায়গাতেওও সমস্যা। এভাবে তিনি দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছেন।

কমলা বানু শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নছরতপুর গ্রামের মৃত মর্তুজ আলীর স্ত্রী। তিনি এখন জংশনের কোয়ার্টারের একটি ঘরে বসবাস করেন। তার এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে শ্রমিকের কাজ করে আসছিল। বর্তমানে বেকার। আর মেয়ে কোম্পানিতে স্বল্প বেতনে কর্মরত ছিলেন। করোনায় কোম্পানি বন্ধ ছিল, খুললে যাবেন। তার বিয়ে হলেও স্বামীর সঙ্গে মিলমিশ না হওয়ায় মায়ের ঘরে থাকেন।

কমলা বানু জানান, তার বয়স ৭০ বছর। তবে তিনি হার মানতে নারাজ। নিজের উপার্জনে বেঁচে থাকতে চান। তাই কারো কাছে হাত না পেতে পিঠার দোকান দেন। করোনা আসায় বর্তমানে এ দোকান বন্ধ।

তিনি জানান, প্রতিদিন বিকেল থেকে অনেক রাত পর্যন্ত পিঠা বিক্রি করে আয় হতো ২০০-২৫০ টাকা। এতে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন।

কমলা বানু আরও জানান, সরকারি ত্রাণ শুধু তিনিই পাননি, এমন নয়। এ কলোনির বাসিন্দা মিনারা খাতুন ও রেবা আক্তার নামে আরও দুই অসহায় নারীও ত্রাণ বঞ্চিত রয়েছেন।

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ গাজীউর রহমান ইমরান বলেন, ‘কমলা বানুকে চিনতে পেরেছি। জংশনে গেলে তার কাছ থেকে সরিষা ও কাঁচা মরিচের ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা খেতাম। জানতে পেরেছি তিনিসহ তিন অসহায় নারী ত্রাণ পাননি। এটা আমাদের কাছে অত্যন্ত লজ্জা ও দুঃখজনক। আমি তাদের কাছে দ্রুত খাদ্য ও ইফতারসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। ’

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি রাইজিংবিডিতে ‘নিজের উপার্জনে চলতে চান’ (লিঙ্ক https://risingbd.com/bangladesh-news/331500 শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। হবিগঞ্জ/মো. মামুন চৌধুরী/সাজেদ