সারা বাংলা

‘যে পুলিশের ভয়ে থাকি, দুর্দিনে তারাই সহযোগিতা করল’

শনিবার (৯ মে) বেলা ১১টা। কালীগঞ্জ থানার ভেতরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে অনেক মানুষ। তাদের মধ্যে আছেন কামার, কুমার, জেলে, মাঝি, নাপিত, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, মুচি, বেদে, রিকশাচালক ও ভ্যানচালক।

সবাইকে আগের দিন ফোন করে এ সময়ে থানায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। লাইনে দাঁড়ানো মানুষগুলোর চোখে-মুখে ভয় ও উৎকণ্ঠা। এমন সময় হঠাৎ করেই কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পংকজ দত্ত থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম মিজানুল হক, পরিদর্শক মো. মুজাহিদুল ইসলাম ও থানার অন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে হাজির হন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পংকজ দত্ত সবার উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা সবাই কষ্ট করে এখানে এসেছেন, এজন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। আমাদের গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) শামসুন্নাহার আপনাদের জন্য খাদ্য সামগ্রী উপহার পাঠিয়েছেন। আপনারা সবাই কষ্ট করে নিয়ে যাবেন।’

এর পর বস্তায় করে প্রত্যেকের হাতে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়। মুহূর্তেই হতদরিদ্র মানুষগুলোর ভয় কেটে গিয়ে চোখে-মুখ হাসি আর আনন্দের ঝিলিক দেখা যায়।

নবী হোসেন নামের এক রিকশাচালক এসপির দেওয়া উপহারের প্যাকেট খুলে দেখেন তাতে চাল, ডাল, ছোলা, তেল, পেঁয়াজ, আলু ও সাবান রয়েছে। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘যে পুলিশের ভয়ে থাকি, তারা এ দুর্দিনে সহযোগিতা করল। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর এসপি স্যারের প্রতি দোয়া রইল।’

এসপি শামসুন্নাহারের পক্ষ থেকে কালীগঞ্জ উপজেলার হতদরিদ্র ২০০ পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম মিজানুল হক বলেন, ‘লকডাউনের কারণে বিপাকে পড়া দরিদ্র মানুষদের অসহায়ত্বের কথা চিন্তা করে এসপি নিজ উদ্যোগেই তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পুলিশের এ কার্যক্রম চলতে থাকবে।’

করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়াতে বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এসপি শামসুন্নাহার।

 

কালীগঞ্জ/রফিক সরকার/রফিক