সারা বাংলা

বেড়িবাঁধ ভাঙন আতঙ্কে খুলনা উপকূলের ৩ লক্ষাধিক মানুষ

ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ ধেয়ে আসার খবরে বেড়িবাঁধ ভাঙন আতঙ্কে সিডর ও আইলা বিধ্বস্ত খুলনার উপকূলীয় এলাকার ৩ লক্ষাধিক মানুষ।

বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে উপকূলে আঘাত হেনে সমতলে আসতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এক্ষেত্রে মঙ্গলবার (১৯ মে) শেষ রাত থেকে বুধবার (২০ মে) সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রম করতে পারে বাংলাদেশের উপকূল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনা জেলার সুন্দরবন সংলগ্ন দাকোপ ও কয়রা উপজেলার চতুর্দিক নদী বেষ্টিত। এ দুই উপকূলীয় এলাকার মানুষের কাছে আতঙ্কের নাম ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ। বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় আইলার পর ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হলেও সেগুলো দীর্ঘমেয়াদি হয়নি। দুর্বল বেড়িবাঁধের কারণে বর্ষা মৌসুমে আবহাওয়া বিরূপ হলে পানির চাপে কোথাও কোথাও ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। গ্রীষ্ম মৌসুমেও মাঝেমধ্যে বাঁধ ভেঙে  অনেক জায়গা রূপ নেয় জলাবদ্ধতায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, খুলনা জেলায় ৯৯৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে বর্তমানে মাত্র ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। তবে, স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের স্থান আরও বেশি।

কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে কয়রা উপজেলায় ২৫ কিলোমিটারের মতো বেড়িবাঁধ জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়েছে।

কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জানান, উপজেলার কয়রা সদর ইউনিয়ন, দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন, উত্তর বেদকাশি ইউনিয়ন ও মহারাজপুর ইউনিয়নের কপোতাক্ষ নদ এবং শাকবাড়িয়া নদীর প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এরমধ্যে কপোতাক্ষ নদের গোলখালী থেকে দশালিয়া পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার ও শাকবাড়িয়া নদীর আংটিহারা থেকে মহরারাজপুর ইউনিয়নের পোবনা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার এলাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বর্তমানে ওই চার ইউনিয়নের ২ লক্ষাধিক মানুষ বর্তমানে বেশ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।

তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলেই এ চার ইউনিয়নের বিপুলসংখ্যক মানুষের ঘুম হারাম হয়ে যায়। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় আম্ফানেও একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়কে নয়, উপকূলের মানুষ জলোচ্ছ্বাসকে বেশি ভয় পায়।

দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রণজিৎ কুমার মণ্ডল জানান, তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের ঢাকী নদীর বটবুনিয়া বাজার সংলগ্ন ৪০০ মিটার ও কামিনীবাসিয়া গাইনবাড়ি সংলগ্ন ৭০ মিটার বেড়িবাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ওই দুটি জায়গা ধসে গেলে ৩১ নম্বর পোল্ডার ভেঙে তিলডাঙ্গা ইউনিয়ন, পানখালি ইউনিয়ন ও চালনা পৌরসভার বিশাল এলাকা লবণ পানিতে প্লাবিত হবে। এতে ফসল হানিসহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে লক্ষাধিক মানুষ। নূরুজ্জামান/এসএম