সারা বাংলা

উপকূলবাসীর আশ্রয়কেন্দ্রে নির্ঘুম রাত পার

সুপার সাইক্লোন আম্ফান আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কেটেছে উপকূলীয় বাগেরহাট জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলা উপজেলাবাসীর।

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি মধ্যেও রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে অনেকে একসঙ্গে ছিলেন তারা। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় ছিলেন। যারা নিজ বাড়িতে ছিলেন, তারাও ঝড় আঘাত হানার আতঙ্কে কাটিয়েছেন নির্ঘুম রাত।

রাতভর আশ্রয়কেন্দ্র এসেছে মানুষ। সকালেও এসেছে অনেকে। কেউ কেউ আবার গবাদিপশু নিয়ে এসেছে আশ্রয়কেন্দ্রে। বুধবার (২০ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত সরকারি হিসাবে জেলায় ৯৫ হাজার লোক আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। ১৫ হাজার গবাদিপশুকেও আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে রাখা হয়েছে।

জেলায় সকাল থেকে মুশুলধারে বৃষ্টির সঙ্গে জড়ো হাওয়া বইছে। বাগেরহাটের নদীতে দ্রুত পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করেছে।

শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বলেশ্বর নদীর পাড়ের বগী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কায় রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন। সেখানে ঠাসাঠাসি করে অবস্থান করছেন।

‘‘শুনেছি ঝড়ের ফলে ১০ ফুট পানি উঠবে। তাহলে আমাদের ঘরবাড়ি, গবাদিপশু সবকিছু ভেসে যাবে। কিছু থাকবে না।’’ 

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদ, কৃষক সামসুর রহমান, রুহুল আমিনসহ কয়েকজন বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন সারারাত, কিন্তু ঘুম হয়নি কারো। বাড়ি-ঘরের চিন্তায় তাদের রাত কেটেছে। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য রিয়াদুল পঞ্চায়েত বলেন, ‘‘আমরা সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার চেষ্টা করছি। প্রত্যেকটি আশ্রয়কেন্দ্রে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ মানুষ অবস্থান করছেন।’’

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, রাতে শরণখোলার কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। আশ্রয় নেওয়া মানুষের খোঁজখবর নিয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় শুকনো খাবার ও সুপেয় পানি পৌছে দেওয়া হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ বলেন, ১২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দুর্গতদের জন্য কাজ করছেন। প্রত্যেক উপজেলায় জরুরি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে। জেলা সদর ও ৯টি উপজেলায় মোট ১০টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে মানুষের যানমালের যাতে কম ক্ষতি হয়, সেই জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে বলে জানান তিনি।

** ঘূর্ণিঝড়ের আগে ঘর রক্ষার চেষ্টা

 

ঢাকা/বকুল