সারা বাংলা

খুলনায় প্রশাসনের ‘বজ্র আটুনি ফসকা গেরো!’

করোনা সংক্রমণ রোধে বিধি নিষেধ প্রতিপালনে খুলনার প্রশাসনের কঠোর নির্দেশনা অনেকটাই ‘বজ্র আটুনি ফসকা গেরো’ তে পরিণত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুন) সকাল থেকেই বিধি নিষেধের তোয়াক্কা না করে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় স্বাভাবিক সময়ের মতোই সবকিছু পরিচালিত হতে দেখা গেছে।

করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাওয়ায় ১১ জুন থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত খুলনায় দোকানপাট, যানবাহন ও চলাচলের ওপর বিধি নিষেধ জারি করা হয়। বৃহস্পতিবার (১১ জুন) সকাল ৭টা থেকে শুরু হওয়া এ নিষেধাজ্ঞা চলবে ২৫ জুন পর্যন্ত।

এদিকে, বিধি নিষেধ অনুযায়ী নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য, কাঁচাবাজার, মৌসুমী ফলের দোকান ও ফার্মেসি ছাড়া অন্যান্য দোকানপাট, শপিংমল ও ফুটপাতের দোকান বন্ধ থাকার কথা থাকলেও ফুটপাতের অনেক দোকান খোলা অবস্থায় দেখো গেছে। অলি-গলির চায়ের দোকানেও চলছে জমজমাট আড্ডা।

সকাল থেকেই মহানগরীর পিকচার প্যালেস মোড়, ডাক বাংলার মোড়, শান্তিধাম মোড়ে সাধারণ মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো। অনেক জায়গায় খুলেছে দোকানও। প্রশাসনেরও তেমন নজরদারি নেই। অনেক স্থানে পুলিশ থাকলেও কোনো কঠোরতা নেই।

রিকশা, ইজিবাইক ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রাইভেটকারসহ ছোট ছোট যানবাহনের কারণে এ সময় শহরের কোথাও কোথাও যানজটের সৃষ্টি হয়।

সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মাহেন্দ্র, ব্যাটারি চালিত অটো ইত্যাদি যানবাহনে দুজনের বেশি যাত্রী বহনের ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়। কিন্তু ইজিবাইক ও মাহেন্দ্রগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের মতো ৫-৬ জন করে যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। রাস্তায় যারা চলছেন তাদের অনেকেরই মুখে মাস্ক নেই।

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, ‘এ বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর হওয়া প্রয়োজন। খুলনার মানুষ স্বাস্থ্য বিধি না মানার কারণে দিন দিন করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এখনও যদি নিয়ম না মানে, তাহলে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে।’

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে খুলনা জেলার সকল উপজেলা ও মহানগরীতে দোকানপাট, শপিংমল, যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচলের উপর খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল হোসেন ১১ জুন (বৃহস্পতিবার) থেকে ২৫ জুন (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত ১৫ দিনের জন্য দোকানপাট, যানবাহন ও চলাচলের ওপর বিধি নিষেধ জারি করেছেন।

বুধবার (১০ জুন) এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এই আদেশ জারি করা হয়।

বিধি নিষেধ অনুযায়ী মোটরসাইকেলে কেবলমাত্র আরোহীই থাকবেন। কোনো যাত্রী পরিবহন করতে পারবেন না। তবে পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রে এটি শিথিলযোগ্য থাকবে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে থ্রি হুইলারগুলোতে দুজনের বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না।

এছাড়া সকল বাস বাসস্ট্যান্ড থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ও আসার ক্ষেত্রে যাতায়াত পথে বাসস্ট্যান্ড ব্যবহার করত হবে। যেখানে-সেখানে বাস থামানো যাবে না।

জনসাধারণ অতি জরুরি প্রয়োজন যেমন ওষুধ ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন-সৎকার ব্যতীত সন্ধ্যা ছয়টা হতে পরবর্তী দিন সকাল সাতটা পর্যন্ত কোনোভাবেই ঘরের বাইরে অবস্থান করতে পারবে না।

ঘরের বাইরে অবস্থানের ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান, শারীরিক দূরত্ব প্রতিপালনসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/সনি