সারা বাংলা

২ প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে বিপাকে দিনমজুর বাবা

নরসিংদীতে একই পরিবারে প্রতিবন্ধী দুই সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর পিতা মো. রাজ্জাক।

রাজ্জাক মিয়ার ৫ সন্তান। তার মধ্যে মেয়ে সানজিদা আক্তার (১৫) সবার বড়। সে শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং ছেলে রায়হান (৬) হলো সন্তানদের মধ্যে চতুর্থ সেও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী।

সদর উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের বাউশিয়া গ্রামে তাদের বাড়ি।

রাজ্জাক মিয়ার পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাজ্জাক মিয়ার পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিন সন্তান সুস্থ্ ও স্বাভাবিক হয়ে জন্মগ্রহণ করলেও দুই সন্তানই প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে। জন্মের পর থেকেই তাদের চিকিৎসা ও ভরনপোষণ নিয়ে অতি কষ্টে পরিবারটি নিয়ে দিনাপাত করেছেন তিনি। একমাত্র বাড়ির ভিটা ছাড়া নেই তার কোন সহায় সম্পত্তি। তিনি যে দিন কাজ করতে পারেন, সে দিনের আয় দিয়েই স্ত্রীসহ সন্তানদের পেটে জোটে খাবার। তা না হলে, খেয়ে না খেয়ে অর্ধাহারে দিনাপাত করতে হয় তাদের। কিন্তু দিনমজুর রাজ্জাক মিয়া প্রতিবন্ধী এই দুই সন্তান নিয়ে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করলেও কেউ কোন সাহায্য সহযোগিতায় এগিয়ে আসেননি।

রাজ্জাক মিয়া বলেন, ‘আমি একজন দিনমজুর। যখন যে কাজ পাই তখন সে কাজই করি। এ থেকে যা পাই তা দিয়েই কোন রকম খেয়ে না খেয়ে এ প্রতিবন্ধী দুইজনসহ পাঁচ সন্তান নিয়ে দিনকাটাচ্ছি। আল্লাহ আমার দুই সন্তানকে প্রতিবন্ধী বানাই দিছে। আমি এই দুইজন প্রতিবন্ধী লইয়া মহাবিপদের মধ্যে আছি। চাহিদা মতন তাগো ওষুদ (ঔষধ) কেনা, জামা কাপড় কেনা, ঠিকমতন খাওন এতকিছু আমি দিতে পারছি না।’

তিনি জানান, গত কিছুদিন আগে বরিশালের এক টাইলস মেস্তরী সঙ্গে যোগালি দিতেন রাজ্জাক। মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে এখন সকল কাজ কর্ম বন্ধ। তাই ওই মেস্তরীও তাদের বাড়ি চলে গেছেন। এখন তার হাতে নেই কোন কাজকর্ম। যার ফলে নেই তার কোন আয় রোজগারও। তাই প্রতিবন্ধী দুইজনসহ পাঁচ সন্তান নিয়ে তিন বেলা খেয়ে না খেয়ে মানবতের দিন কাটছে তার।

রাজ্জাক মিয়ার স্ত্রী মোর্শিদা বেগম বলেন, ‘প্রতিবন্ধী দুইজনসহ পাঁচ সন্তান সামলাতেই রিতিমতো আমি হিমসিম খাচ্ছি। এখন তাদেরকে রেখে কোন জায়গায় কাজ কর্মের জন্যে যাইতেও পারিনা। সব মিলে আমাদের খুব কষ্টে দিন কাটচ্ছে।’

নরসিংদী সুইড বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন সরকার জানান, দিনমজুর রাজ্জাক মিয়া তার প্রতিবদ্ধী সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তার পাঁচ সন্তানের মধ্যে এক মেয়ে ও এক ছেলে শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। তারা কেউই সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতা পান না। এমনকি সমাজ সেবা অধিদপ্তরের অধীনে যে প্রতিবন্ধীর ব্যক্তিদের তালিকাভূক্তি করতে হয় তাও তাদের নেই জানা। তাই বর্তমানে অসহায় এ পরিবারটিকে বাঁচাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সমাজের দানশীল ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার উচিত বলে আমি মনে করি।   মাহমুদ/বুলাকী