সারা বাংলা

রাতে এক কিলোমিটার কাদা রাস্তা হেঁটে বিয়ে বন্ধ করলেন ইউএনও

রাতে এক কিলোমিটার কাদা রাস্তা হেঁটে ঘটনাস্থলে গিয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করলেন নাটোরের গুরুদাসপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. তমাল হোসেন। 

করোনাভাইরাসের এই দুঃসময়ে শনিবার (২০ জুন) গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের পশ্চিম নওপাড়া গ্রামে এই  বাল্যবিবাহের আয়োজন চলছিলো। বিয়ে বাড়ি থেকে কাজীর ফোন পেয়ে শনিবার রাত ১০টার দিকে ইউএনও মো. তমাল হোসেন সেই গ্রামে ছুটে যান। 

জানা যায়, সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রী (১৩) স্থানীয় মৌখাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। দরিদ্র কৃষক পরিবারের মেয়েটির ইচ্ছে ছিলো আরো পড়াশোনা করার। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা জোর করে তাকে বিয়ের পিড়িতে বসিয়েছিলো।এমনকি বিয়ের কাজীর কাছেও সত্য তথ্য লুকানো হয়েছিলো। বিয়ের বয়স পূর্ণ হয়েছে বলে ফোন দেওয়া হয়েছিলো ওই ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজী মো. আশরাফুল আলমকে। বিয়ে পড়ানোর জন্য কাজী আসেন। মেয়েকে দেখতে চান এবং পরিবারের কাছে মেয়ের জন্মসনদের কপি চান। 

পরে পরিবারের পক্ষ থেকে সব স্বীকার করা হয়। কাজীকে বলা হয়, মেয়ের বয়স কম আছে। কৌশল অবলম্বন করে কাজী মেয়েটিকে বাইরে নিয়ে তার মনের কথা জানেন। মেয়েটি কাজীকে তার পড়াশোনার আগ্রহের কথা বলে এবং যেভাবেই হোক বিয়েটি বন্ধ করার অনুরোধ জানায়।কাজী সব শুনে ঘটনাস্থল থেকেই ইউএনওকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। 

ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই মেয়ের বাড়িতে পৌঁছান ইউএনও তমাল হোসেন। ওই মেয়ের বিয়ে বন্ধ করেন এবং মেয়ের হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেন। বিয়ের উপযুক্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত যেন ওই মেয়েকে বিবাহ না দেওয়া হয় তার জন্য পরিবারের কাছ থেকে মুচলেকা নেন।

ইউএনও জানান, মেয়েটির পরিবারের লোকজনকে বুঝিয়ে বলা হয়েছে। মেয়ের যেন পড়াশোনা করতে কোন সমস্যা না হয় তার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করার কথাও তাদের জানিয়েছেন। নগদ কিছু অর্থ মেয়েটির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

আরিফুল/টিপু