সারা বাংলা

চাঁদপুরে টক অব দ্যা টাউন অটোচালক সজীব

চাঁদপুরে এখন টক অফ দ্যা টাউন-এ পরিণত হয়েছে অটোরিকশা চালক মো. সজীব (১৮)। ৬১ লাখ টাকা ফেরত দিয়ে তিনি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সমস্ত শহরের আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হযেছেন।

সোমবার (২২ জুন) সজীব রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘মালিক খুঁজে না পাওয়ায় টাকাগুলো নিজের কাছে রেখেছিলাম। পরে পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছিলাম।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুরানবাজারে ঘাটশ্রমিক দেলোয়ার সর্দারের চার সন্তানের মধ্যে মো. সজিব দ্বিতীয়। কবরস্থান সড়কে তাদের বাসা। পঞ্চমশ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন তিনি। এরপর থেকে অটোরিকশা চালান।

স্থানীয় বাদল গাজী বলেন, ‘আমাদের সহযোগিতায় ৬১ লাখ টাকা সজীব পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। আমি নিজে সদর মডেল থানার ওসিকে টাকার সন্ধান দিয়েছি। পরে গ্যারেজে রাখা গাড়িতে সুরক্ষিত অবস্থায় ব্যাগ ভর্তি টাকা পুলিশ এসে নিয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে সজীব টাকায় হাত না দিয়ে সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’

পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমান জানান, ছেলেটির কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ৬১ লাখ টাকা বিকাশ কর্তৃপক্ষকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। আমরা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচ হাজার এবং বিকাশ কর্তৃপক্ষ তাকে নগদ ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দিয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সজীবকে ফলমূল ও খাদ্য সামগ্রী উপহার দিয়েছি। সর্বপরী তার সততার কথা এলাকার মানুষের মুখে মুখে। যা শুনে আমাদেরও খুব ভালো লাগছে।’

বিকাশের এজেন্ট আলমগীর হোসেন জুয়েল বলেন, ‘‘রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় বিকাশ এজেন্ট কর্মী মাসুদ হোসেন শহরের ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে ৬১ লাখ টাকা উত্তোলন করে। ব্যাংক থেকে নেমে ব্যাগভর্তি সেই টাকা নিয়ে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় উঠে। যা নিয়ে শহরের জোড় পুকুরপাড় এলাকায় পৌঁছায় মাসুদ। কিন্তু ভুলক্রমে অটোরিকশাতেই টাকার ব্যাগ রেখে সে নেমে যায়।

‘যেখানে আমি নিজেও আমার ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে মাসুদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এরপর আমরা দুইজন ফরিদগঞ্জে কাজে চলে যাই। প্রায় আধঘণ্টা পর মাসুদ বুঝতে পারেন যে টাকার ব্যাগটি তিনি অটোরিকশায় ফেলে এসেছেন। পরে পুলিশের সহযোগিতায় প্রায় ৭ ঘন্টা পর টাকাগুলো উদ্ধার করা হয়।” অমরেশ দত্ত জয়/সনি