সারা বাংলা

বৃষ্টি হলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে হরেনের নির্ঘুম রাত কাটে

রোগা-পাতলা গঠন হরেন চন্দ্রের। তার নিজের জমি নেই। শারীরিক প্রতিবন্ধী স্ত্রী আর একমাত্র সন্তানকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ির ভিটায় ছাপড়া  ঘরে তুলে সেখানে বসবাস করেন। ছাপড়া ঘরটি সংস্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি হলে ছাউনির পুরনো টিনের ছিদ্র দিয়ে পানি পড়ে। নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় তাদের।

স্ত্রীর প্রতিবন্ধী ভাতা (তিন মাসে দেড় হাজার টাকা) আর নিজের ভিক্ষার চাল দিয়ে যেখানে দুইবেলা খাওয়া ঠিকমতো জোটে না, তাহলে ঘরটি সংস্কার করবেন কীভাবে? 

সদর উপজেলার গরিনাবাড়ী ইউনিয়নের প্রধানপাড়া গ্রামে শ্যালক বকুল রায়ের উঠানে হরেন রায়ের ছোট্ট ছাপড়া ঘর। সেখানে কষ্টে তাদের বসবাস। মেয়ে সূবর্ণা রাণী স্থানীয় বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পাটকাঠির পুরনো বেড়া আর ঘূণেধরা বাঁশের খুঁটিতে দাঁড়িয়ে থাকা ঘরে পুরনো একটি চৌকি ছাড়া কিছু নেই। মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে মশারি, এমনকি মাথায় দিয়ে ঘুমানোর বালিশও নেই তাদের। হরেন চন্দ্র জানান, মাথার নিচে কাঠের তৈরি পিঁড়ি দিয়ে ঘুমান। তবে বৃষ্টি নামলে দুর্ভোগ বাড়ে।

তিনি জানান, রাতে বৃষ্টি আসলে খুব কষ্ট হয়। ছাউনির টিনের ছিদ্র দিয়ে পানি পড়ায় ঘুমাতে পারেন না।

হরেন রোগা হওয়ায় কেউ তাকে কাজে নেয় না। ভিক্ষা করে যা দু’-এক কেজি চাল পান, তা দিয়ে ঠিকমতো খাওয়াও জোটে না। 

হরেনের শারীরিক প্রতিবন্ধী স্ত্রী প্রমিলা বলেন, ‘আমি কোনো কাজ করতে পারি না। মেয়ের বাবা ভিক্ষা করলে খাবার জোটে, না হলে উপোস থাকতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘সরকার বলে ফ্রি ঘর করে দেছে, কই হামাকতো দেয় না।’ 

হরেনের শ্যালক বকুল রায় বলেন, ‘হরেনদের খুব কষ্টে দিন কাটছে। আমরাও অস্বচ্ছল। তাদের সহযোগিতা করার সামর্থ নেই। কিছু সরকারি সহায়তা পেলে তাদের বড্ড উপকার হতো।’  

ঢাকা/বকুল