সারা বাংলা

‘ত্রাণ নিয়ে বাড়ি যাব, তারপর খাব’

‘করোনার সাথে বন্যা আইলো। করোনার কারণে কাজ তো গ‌্যাছে, এখন বন্যায় ঘর ডুবে যাওয়ায় থাকাও কষ্ট। হাতে ট্যাহা-পয়সাও নাই যে ঈদের দিন একটু সেমাই-চিনি কিনব, মাংস আর নতুন কাপড় তো দূরের কথা। ত্রাণ নিয়ে বাড়ি যাব, তারপর খাব।’

শনিবার (১ আগস্ট) গোপালগঞ্জে ত্রাণ নিতে এসে এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা বলেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মিলন সরদার।

গোপালগঞ্জে মধুমতি নদী ও কুমার নদে পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তিন উপজেলার ১৫টি গ্রামের অন্তত ১২ হাজার মানুষ। বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে যাওয়ায় ৩৮৫টি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। এসব এলাকায় নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। ভেঙে পড়েছে স‌্যানিটেশন ব্যবস্থা।

জেলা প্রশাসনের উদোগে উলপুর, নিজড়া ও হরিদাসপুর এলাকায় বন্যাকবলিত শতাধিক পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় নিজড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান, উলপুর ইউপির চেয়ারম্যান মো. কামরুল হাসান বাবুল, জেলা বিডি ক্লিনের সমন্বয়ক সুজন দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নিজরা ইউনিয়নের নিজরা গ্রামের রিপন সরদার, মোহন খাঁ, উলপুর ইউনিয়নের তেতুলিয়া গ্রামের মজিবর মোল্যা জানান, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে তাদের হাতে কাজ নেই। বন্যার কারণে তাদের দুর্ভোগ আরো বেড়েছে।

জেলা বিডি ক্লিনের সমন্বয়ক সুজন দাস বলেন, ‘বন্যায় পানিবন্দিদের সহযোগিতা করার জন্য তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। পানি না নেমে যাওয়া পর্যন্ত সহায়তা কার্যক্রম অব‌্যাহত রাখব।’

নিজড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘নিজড়া এলাকায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের মাঝে ঈদের আনন্দ নেই। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানিয়েছেন, বন‌্যাদুর্গতদের সাহায্যের জন্য ১৫০ মেট্রিক টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।