সারা বাংলা

কমেছে বন্যার পানি, পানিবন্দি টাঙ্গাইলের লক্ষাধিক মানুষ

টাঙ্গাইলে যমুনা নদীসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীতে ৫ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। বর্তমানে এ নদীতে বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ঝিনাই নদীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩.১৪ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ও বংশাই নদীতে ৯.৯৭ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপদসীমার ৮২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) দুপুরে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।  

এদিকে নদ-নদীর পানি কমলেও কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে এবং নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে করে জেলার ১১ উপজেলার ৬ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি। দির্ঘদিন পানিবন্দি হয়ে থাকায় এ সব পরিবারে দেখা দিয়েছে খাদ্যসংকট। পাশাপাশি নলকূপ ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির স্বল্পতাও দেখা দিয়েছে। এদিকে গত কয়েকদিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ পর্যন্ত টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, ভূঞাপুর, বাসাইল, গোপালপুর, নাগরপুর, দেলদুয়ার, ঘাটাইল, সখীপুর, ধনবাড়ী ও মির্জাপুর উপজেলায় বন্যার পানিতে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলার ১২ উপজেলার মধ্যে ১১ উপজেলায় ৬ লাখ ১৩ হাজার ২২৭ জন মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারের অনুদান থেকে বিভিন্ন এলাকায় বানভাসি মানুষদের মধ্যে এক হাজার ৫৫ মেট্রিকটন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ১৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৬ লাখ টাকার শিশুখাদ্য ও ১২ লাখ টাকার গবাদি পশুর খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে দির্ঘদিন ধরে পানিবন্দি থাকা এ সব মানুষেরা পড়েছে অর্থ সংকটে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য সঙ্কুলানও করতে পারছেন না তারা। সরকারি তহবিলে চাল-শুকনো খাবার বিতরণ করা হলেও বেশিরভাগ এলাকাতেই এখনও কোনো ত্রাণের দেখা মেলেনি।

বন্যায় জেলার সবচেয়ে বেশি পানিবন্দি মানুষ রয়েছেন ভূঞাপুর উপজেলায়। যমুনা নদীর তীরবর্তী হওয়ায় পানিবন্দি এ সব মানুষ অনেকদিন ধরেই বসবাস করছেন বিভিন্ন উঁচু সড়কে। অনেকেই আবার আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় বিদ্যালয়ে।

এদিকে বন্যার পানি বাড়ার ফলে জেলার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক, ব্রিজ-কালভার্ট ভেঙে আঞ্চলিক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।