সারা বাংলা

বৈরুতে বিস্ফোরণ: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রনির মৃত‌্যু

লেবাননের বৈরুতে বিস্ফোরণের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেহেদী হাসান রনি (২৫) নামে এক যুবকের মৃত‌্যু হয়েছে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের ভাদেশ্বরা গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে।

বুধবার (৫ আগস্ট) সকালে রনির মৃত্যুর খবর পরিবারের কাছে পৌঁছায়। ছেলেকে হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বাবা তাজুল ইসলাম। মা ইনারা বেগম ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় লেবাননের বৈরুতে বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন রনি। গ্রামের একটি স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। বাহরাইন প্রবাসী পিতা তাজুল ইসলাম সেখানে তেমন সুবিধা করতে পারছিলেন না। তাই পরিবারের কথা ভেবে রনি বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। 

ধার-দেনা ও সুদে টাকা এনে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ লেবাননে পাড়ি জমান রনি। রনি লেবাননে চলে যাওয়ার পর তার বাবা তাজুল ইসলামও বাহরাইন থেকে দেশে চলে আসেন। ফলে পরিবারের পুরো চাপ পড়ে রনির ওপর। 

লেবাবনের বৈরুতে একটি বিপনী বিতানে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করতেন রনি। মাসে ২০ হাজার টাকা বাড়িতে পাঠাতে পারতেন। টানা ছয় বছর পর গত মার্চ মাসে দেশে ফেরার কথা ছিলো তার। দেশে ফেরার সকল প্রস্ততিও নিয়েছিলেন। কিন্তু করোনা সবকিছু উল্টাপাল্টা করে দিয়েছে। এদিকে কাজ বন্ধ থাকায় বাড়িতেও টাকা পাঠাতে পারছিলেন না। ঈদুল আজহার সময় মাত্র ১৬০০ টাকা পাঠিয়েছিলেন বাড়িতে।

রনির বাবা তাজুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) দুপুরে সর্বশেষ রনির সাথে তার কথা হয়। বাবার সাথে কথা বলে মায়ের সাথেও কথা বলেন রনি। রাতে রনির এক সহকর্মী ফোন করে জানান, রনি অসুস্থ, তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার (৫ আগস্ট) ভোরে আবার ফোন করে জানান রনি মারা গেছেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা বাবা এখন ছেলের লাশ দেশে আনার দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে।

মাছিহাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল আমিনুল হক পাভেল বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই আমি রনির পরিবারের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। লাশ দেশে আনার জন্য কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করছি। লাশ আনার জন্য সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’