সারা বাংলা

মানিকগঞ্জে বন্যায় নার্সারি ব্যবসায়ীদের ৩ কোটি টাকার ক্ষতি

মানিকগঞ্জে দুদফা বন্যায় নার্সারি ব্যাবসায়ীদের বড় ধরনের ক্ষতির মধ‌্যে পড়েছেন। জেলার সাতটি উপজেলার দুটি পৌরসভা এবং ৬৫টি ইউনিয়নে তিন শতাধিক নার্সারি রয়েছে। দুদফা বন্যায়, ফলজ, বনজ ও বিভিন্ন প্রজাতির ২০-২৫ লাখ চারা বানের পানিতে ডুবে মরে গেছে। এতে প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে জেলা নার্সারি অ‌্যাসোসিয়ান সমিতি। করোনাভাইরাসের প্রভাবে দীর্ঘদিন শ্রমিক সংকট ও গাছের চারা বিক্রি না করতে পারায় এমনিতেই আর্থিক সংকটে ছিলেন মালিকরা। এর মধ্যে ভয়াবহ বন্যায় আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা। এতে তিন শতাধিক নার্সারি মালিকের সঙ্গে ৩-৪ হাজার মানুষ সরাসরি জড়িত রয়েছে। ফলে বন্যার পানিতে নার্সারির চারা পানিতে তলিয়ে গেছে, কয়েক হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। জেলা নার্সারি অ‌্যাসোসিয়েশন সমিতি সূত্রে জানা যায়, জেলার সিংগাইর উপজেলা শতাধিক, ঘিওর উপজেলা ৫০, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ৫০, সাটুরিয়া উপজেলার ৫০, দৌলতপুর উপজেলায় ১০, হরিরামপুর উপজেলায় ৫০ এবং শিবালয় ৪০টি নার্সারি রয়েছে।  সাটুরিয়া উপজেলার কামতা গ্রামের নার্সারির মালিক রাজা বলেন, ‘আমি ব্যাংক থেকে ঋণ করে নার্সারি ব্যাবসা করে আসছি। ভালই চলছিল। কিন্তু বন্যার পানিতে আমার অধিকাংশ চারাই মরে গেছে। কিছু চারা রাস্তায় উঠাতে পারছিলাম।’ মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বীথি আল আমিনের মালিক নৈমুদ্দিন বলেন, ‘আমার বিভিন্ন প্রজাতির ৬০ হাজার গাছের চারা বন্যার পানিতে মরে গেছে। এতে ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’  মানিকগঞ্জে  ব্রাকের জেলা সমন্বয়ক প্রণব কুমার রায় বলেন, বন্যায় আমাদের নার্সারির ১০ হাজার চারা পচে গেছে। এতে আমাদের ৫ লক্ষ টাকার লোকসান হয়েছে। তাছাড়া বন্যার পানির কারনে আমাদের বেচা কেনা কমে গেছে। মানিকগঞ্জ জেলা নার্সারি অ‌্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল বলেন, আমাদের ৩ শতাধিক নার্সারির মালিক থাকলেও এর সাথে ৩-৪ হাজার লোক কর্মহীন হয়ে পড়েছে।  বন্যার কারনে মাসিক ভিত্তিক শ্রমিকদের বিল দিতে পারছি না। মানিকগঞ্জ জেলা নার্সারি অ‌্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহুফুজুর রহমান কামাল বলেন, ‘আমার নিজের নার্সারির এক ঘণ্টার মধ্যে ছয় লাখ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চাড়া বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। হঠাৎ ভয়াভহ বন্যায় কারণে শ্রমিক ও উচু স্থানের অভাবে আমারা চারা স্থানান্তর করতে পারি নাই। করোনা প্রভাব যেতে না যেতেই আমাদের বন্যার কারণে জেলায় আনুমানিক ২০-২৫ হাজার বিভিন্ন জাতের গাছের চারা মরে গেছে। এতে আমাদের তিন কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।’ মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক মো. শাজাহান আলী বিশ্বাস বলেন, বন্যায় নার্সারি মালিকদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে উপজেলা কৃষি অফিসারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরে ক্ষতিগ্রস্তদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হবে।