সারা বাংলা

মুন্সীগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙন, ফুঁসে উঠেছে ধলেশ্বরী

ধলেশ্বরী নদীতে পানি বেড়ে স্রোতের তীব্রতায় মুন্সীগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের মালিরপাথর এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (৬,৭ আগস্ট) বাঁধের বিশাল এলাকা ধলেশ্বরীতে বিলীন হয়ে গেছে।

শুক্রবার (৭ আগষ্ট) বিকেলে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস ভাঙন কবলিত শহর রক্ষা বাঁধের মালিরপাথর এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসিরা জানিয়েছেন, ব্লক সেটিং খুলে গেলেও সংস্কার না করায় চলতি বর্ষা মৌসুমে শহর রক্ষা বাঁধের মুক্তারপুর অংশে বড় ধরনের ফাটল দেখা দেয়। আর ধলেশ্বরীতে পানি বেড়ে ভেঙে থাকা স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করে বাঁধটি বৃহস্পতিবার থেকে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নদী ভাঙন থেকে রক্ষায় নির্মিত শহর রক্ষা বাঁধটি দীর্ঘ বছর ধরে সংস্কার না করায় জেলা শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ, নয়াগাঁও, মিরেশ্বর, বাগবাড়ী, মুক্তারপুর সেতু এলাকা, মালিরপাথর ও বিনোদপুর পর্যন্ত একাধিক স্থানে ফাটল সৃষ্টি হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ- বছরের পর বছর ধরে বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ফাটল, বাঁধের স্লাব ও ব্লক সেটিং খুলে খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় এবং বাঁধের লিকেজ দিয়ে পানি ঢুকে বাঁধটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে।

এছাড়া বাঁধের একাধিক স্থানে স্থানীয় বালুদস্যুরা ড্রেজারের পাইপ স্থাপন করে জমি ভরাট ও বালুর স্তুুপ তৈরি করে বালু ব্যবসা করায় বাঁধটিকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে।

২০১৬ সালের জুলাই মাসে মালিরপাথর এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধে আকস্মিক ভাঙ্গনে ব্লকসহ বাঁধের বিরাট অংশ ধলেশ্বরী নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ওই সময় কোন রকমে মেরামত করলেও স্থায়ীভাবে কোন ব্যবস্থা নেয়নি মুন্সীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে মালিরপাথর, মুক্তারপুরের বাঘবাড়ী, মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাট এলাকাসহ একাধিক স্থানে বাধেঁ ফাটলসহ বছরের পর বছর ধরে সেটিং বিনষ্ট হয়ে বাঁধের ব্লকগুলো এলোমেলো ভাবে পড়ে আছে। কোথাও খুলে যাওয়া ব্লকও নেই। অন্যদিকে গত বছরের(২০১৯) ২৬ জুলাই শহরের মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটের অদূরে হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকার লোকজন বাঁধ কেটে নালা তৈরি করায় আকস্মিক ভাঙন দেখা দেয়।

একাধিক শহরবাসীরা জানান, দীর্ঘ বছর ধরে সংস্কার না করায় বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ফাটল সৃষ্টিসহ খুলে গেছে বাঁধের ব্লকগুলো। এ অবস্থায় নদী তীরবর্তী এলাকাবাসীর মধ্যে ভাঙনের আশঙ্কা দিয়েছে। ফলে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে তীরবর্তী হাজার হাজার পরিবার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড মুন্সীগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের নির্বাহি প্রকৌশলী টি এম রাশিদুল কবীর জানান, করোনাভাইরাসের কারণে শহর রক্ষা বাঁধটি সংস্কার কাজ পিছিয়ে যায়। বর্তমানে প্রায় ৯ হাজার ব্লক তৈরি করা হয়েছে। ধলেশ্বরীর পানি কমলে সংস্কারের কাজ শুরু করবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।