যৌতুকের দাবিতে স্কুলশিক্ষিকা স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখার অফিসার রঞ্জন কুমার বৈদ্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গুরুতর আহত কাজল রাণী সরকারকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বর্তমানে হাসপাতালের বেডে শুয়ে অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করছেন শিমুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কাজল রাণী সরকার। শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে শহরের সুলতানপুর শাহপাড়ায় এ ঘটনাটি ঘটে।
সাতক্ষীরা সদর থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে সাতক্ষিরার দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের শশাডাঙ্গা গ্রামের নিতাই বৈদ্য’র ছেলে রঞ্জন কুমার বৈদ্য’র সঙ্গে ময়মনসিংহ জেলার পরিতোষ সরকারের মেয়ে কাজল রাণী সরকারের বিবাহ হয়। বিবাহের সময় নগদ পাঁচ লাখ টাকা, ১.৫ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, স্বর্ণের হাতের রুলি, দুটি আংটি ও সাংসারিক যাবতীয় আসবাবপত্রসহ চার লাখ টাকার জিনিসপত্র নেন রঞ্জন কুমার বৈদ্য’র পরিবার।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বৈবাহিক জীবনে তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান আসে। যার নাম রুদ্রা (৮) । সন্তান জন্ম নেওয়ার পরপরই কাজল রাণী সরকারের শাশুড়ি সবিতা বৈদ্য’র কুপরামর্শে রঞ্জন কুমার বৈদ্য তার স্ত্রীর কাছে পঁচিশ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে শত নির্যাতন সহ্য করেও এ পর্যন্ত রঞ্জন কুমার বৈদ্যকে বিশ লাখ টাকা যৌতুকও দেওয়া হয়।
অভিযোগসূত্রে জানা যায়, এতো টাকা দেওয়ার পর আরও যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন করতে থাকেন রঞ্জন। একপর্যায়ে বিশেষ টাকার প্রয়োজন উল্লেখ করে স্ত্রীর কাছে আরও পাঁচ লাখ টাকা চান রঞ্জন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় রঞ্জন উত্তেজিত হয়ে শনিবার দুপুরে শহরের সুলতানপুর শাহপাড়ার বাসায় স্ত্রী কাজল রাণী সরকারের তলপেটে লাথি মারেন রঞ্জন। এতে সে ঘরের মেঝেতে পড়ে যান কাজল। এতে তার যৌনাঙ্গ দিয়া রক্তক্ষরণ হতে থাকে।
এ সময় তার শাশুড়ি এসে তিনিও চড়, কিল, লাথি মারেন। এসময় চিৎকার ও ধস্তাধস্তির শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা এসে কাজলকে উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ওসি আসাদুজ্জামান আরও জানান, যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে নির্যাতনকারী ব্যাংক কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার বৈদ্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।