সারা বাংলা

ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়: আখাউড়ায় মামলা 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগে আখাউড়া থানার পাঁচ পুলিশ সদস‌্যের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে আখাউড়া পৌর শহরের মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা হারুন মিয়া বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আখাউড়া) আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং সিআর-৮৯/২০।

বিজ্ঞ আদালত এক আদেশে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জেলার পুলিশ সুপারকে বলেছেন। অভিযুক্তরা হলেন আখাউড়া থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুতিউর রহমান, এসআই হুমায়ূন, এএসআই খোরশেদ এবং কনস্টেবল প্রশান্ত ও সৈকত।

মামলার বিরণীতে জানা যায়, আখাউড়ার পৌর শহরের মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা হারুনের প্রতিবেশী হাসিনা বেগম ওরফে চিকুনী বেগম এবং তার মেয়ে তানিয়া ও তানজিনা অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে। হারুন প্রতিবেশী চিকুনীর মাদক ব্যবসায় বাধা দিলে চিকুনী ক্ষুদ্ধ হয়ে পুলিশ সদস্যদের হারুনের পিছনে লেলিয়ে দেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৬ মে গভীর রাতে অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্য নাটকীয়ভাবে চিকুনী বেগমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরস্পর যোগসাজশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওই পুলিশ সদস্যরা হারুনের বাড়িতে প্রবেশ করে তল্লাশির নামে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন। এ সময় ক্রসফায়ার ও হত্যার ভয় দেখিয়ে ঘরে থাকা নগদ ৪০ হাজার টাকা বলপূর্বক ছিনিয়ে নেয়।

এ ছাড়াও তারা ঘরের আসবাবপত্র উলটপালট করে এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে ওইদিনই ভোর চারটার দিকে পুনরায় ওই পুলিশ সদস্যারা এসে হারুন ও তার স্ত্রীকে মিথ্যা মাদক মামলা ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ভয় দেখিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে এক লাখ টাকা দাবি করেন। তা না হলে তাদেরকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন। ওই সময় তারা প্রাণ রক্ষায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে রফা দফা করলে হারুন ও তার স্ত্রীকে ছেড়ে দেয় এবং চলে যাওয়ার সময় বিষয়টি ঊর্দ্ধতন অফিসারদের জানালে হারুনকে ক্রসফায়ার দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়ে যান।

এ বিষয়ে মামলার বাদী হারুন মিয়া বলেন, ‘অভিযুক্তরা আমাকে বিভিন্ন সময় ক্রসফায়রের ভয় দেখিয়ে ধাপে ধাপে টাকা নিয়েছে। তাদের কারণে আজকে আমি বাড়িছাড়া। ন্যায় বিচারের আশায় আদালতে অভিযোগ দিয়েছি।’

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রসূল আহমেদ নিজামী বলেন, এ ঘটনায় আগেও একটি অভিযোগ হয়েছিল, যা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তদন্ত করছেন। যদি আদালত পরবর্তীতে কোন নির্দেশ দেন, সে মোতাবেক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনও আদালতের কোন আদেশ আমাদের কাছে আসেনি।’