রংপুরের মিঠাপুকুরে চুরির অভিযোগ নৈশপ্রহরীকে পিটিয়ে হত্যায় ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধের পর ওই থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে গণপিটুনিতে নৈশপ্রহরী তছলিম উদ্দিনের (৫০) মৃত্যুর সঙ্গে ওসি প্রত্যাহারের কোন সর্ম্পক নেই বলে জানিয়েছেন রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার।
উপজেলার শঠিবাড়ীতে গত শনিবার ভোরররাতে চোর সন্দেহে গণপিটিুনিতে নিহত তছলিম উদ্দিনের ছেলে ইয়াসিন আলী ১০ জনের নাম দিয়ে এবং অজ্ঞাত আরও ১২ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেছেন। পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
নিহত তছলিম উদ্দিন উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের শীতলগাড়ী গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে। এ দিকে নৈশপ্রহরী পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী শনিবার রাতে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে মহাসড়কের দুপাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। ঈদ পরবর্তী রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে কর্মমুখী মানুষ এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার ও মিঠাপুকুর থানার ওসি জাফর আলী বিশ্বাস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় স্থানীয় জনতা।
এলাকাবাসি জানায়, উপজেলার শঠিবাড়ীহাটে মুদিবাজারে নৈশ প্রহরী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেন তছলিম উদ্দিন। শনিবার ভোররাতে তার দায়িত্ব পালনের সময় এলাকায় সাহেব আলী নামে একজনের মুদি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। এ সময় স্থানীয়রা রমজান আলী (১৮) নামে এক চোরকে আটক করেন। সে পাশের পীরগঞ্জ উপজেলার জীবনানন্দ গ্রামের মোকছেদ আলীর ছেলে।
উপস্থিত লোকজনকে রমজান জানান, নৈশ প্রহরী তছলিমও ওই চুরির সঙ্গে জড়িত। স্থানীয় জনতা ওই দুইজনকে গণপিটুনি দেয়। এতে তছলিম উদ্দিন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন দুপুর ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
রংপুর জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, প্রশাসনিক কারণে মিঠাপুকুর থানার ওসি জাফর আলী বিশ্বাসকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে রংপুর পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। তবে গণপিটুনিতে নৈশপ্রহরীর মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে ওসির প্রত্যাহারের কোন সর্ম্পক নেই বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
তিনি আরও বলেন, দোকানে চুরি এবং গণপিটুনিতে নৈশপ্রহরী হত্যার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে দুইজনেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে জোরালো অভিযান চলছে।