সারা বাংলা

অর্ধেক শরীর নিয়ে চলছে পটলের জীবন (ভিডিও)

শরীরের অর্ধেক অংশ নেই। সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ কাঠালতলা মোড়ে সারা দিন ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের এপার থেকে ওপারে হুইল চেয়ারে করে ছুটে চলেন জহুরুল ইসলাম পটল (৩০)। মহাসড়কে গাড়ি থামলেই ভিক্ষা চান তিনি। কেউ দেন ৫ টাকা, কেউ দেন ১০ টাকা। কেউ কেউ বলেন, মাফ করেন।

প্রায় দুই বছর ধরে এভাবেই মহাসড়কে ভিক্ষা করেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের চর-সয়দাবাদ গ্রামের শোবা চাঁদের ছেলে পটল। সারা দিনে ৪০০-৫০০ টাকা পান ভিক্ষা করে। ভিক্ষার টাকায় চলে বৃদ্ধ মা-বাবা ও তার সংসার।

বাবার সঙ্গে স’মিলে কাজ করতেন পটল। প্রায় ১০ বছর আগে কাজ করার সময় হঠাৎ পায়ের তালুতে আঘাত পান তিনি। তাতে পচন ধরলে পায়ের গোড়ালি কেটে ফেলতে হয়। ধীরে ধীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে দুই পায়ে। দরিদ্র পরিবার স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রায় ১২ লাখ টাকা ব‌্যয়ে চিকিৎসা করিয়েও ফল পাওয়া যায়নি। পরে কোমরের নিচ থেকে দুই পা কেটে ফেলা হয়। সেই থেকে চলাচলের জন‌্য হুইল চেয়ারই ভরসা। ভিক্ষা করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি।

সম্প্রতি সংবাদ সংগ্রহে যাওয়ার পথে দেখা হয় জহুরুল ইসলাম পটলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আগে স’মিলে কাজ করতাম। কখনো রিকশা-ভ্যান চালাতাম। এতে মা-বাবা ও ভাই-বোন নিয়ে সংসার ভালই চলতো। স’মিলে কাজ করার সময় হঠাৎ করেই পায়ে আঘাত পাই। ধীরে ধীরে আমার দুই পা নষ্ট হয়ে যায়। পরে পা দুটি কেটে ফেলা হয়। বাধ্য হয়েই ভিক্ষা করি। সকালে বৃদ্ধ বাবা ভ্যানে করে এনে মহাসড়কের পাশে রেখে যান। মহাসড়কের যাত্রীদের সহযোগিতায় চলছে সংসার। তবে করোনার কারণে আয় কমেছে। কোনো কোনো দিন এক বেলা খেয়ে থাকতে হচ্ছে। সরকার যদি একটা দোকান করে দিতো, তাহলে আমার আর ভিক্ষা করতে হতো না।’ 

 

সয়দাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম বলেন, ‘পটল আমার কাছে যখনই আসে, তখনই ওকে চাল অথবা টাকা দেই। তাকে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। সুযোগ হলে তার জন‌্য ভালো কিছু করব।’