সারা বাংলা

মেজর সিনহা হত্যা: তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় পেছালো

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার মেয়াদ ফের বাড়িয়ে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।

ঘটনার সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে সংশ্লিষ্ট টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের সঙ্গে কথা বলতে না পারাকে প্রতিবেদন জমা দিতে দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার (৩১ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

মিজানুর বলেন, ‘‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দিতে ইতোপূর্বে বাড়ানো সময় সোমবার (৩১ আগস্ট) শেষ হয়েছে। তাই সময় বাড়াতে রোববার (৩০ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানানো হয়েছিলো।

‘মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি বিবেচনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় বাড়িয়ে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে।” 

রোববার সকাল থেকে কক্সবাজারের হিল ডাউন সার্কিট হাউজে শুরু হয় তদন্ত কমিটির এক সভা। সভা শেষ হয় সন্ধ্যায়।

সভা শেষে কমিটির প্রধান মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘তদন্তের কাজ একেবারেই শেষ পর্যায়ে। শুধুমাত্র উনাকে (প্রদীপ) জিজ্ঞাসাবাদ করা এবং জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যগুলোই বিশ্লেষণই বাকি থাকবে। সিনহা নিহতের ঘটনায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ঘনিষ্টভাবে জড়িত। তাই প্রদীপ কুমার দাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করা ছাড়া কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়া ঠিক হবে না।’

প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে ‘গাড়ি তল্লাশীকে’ কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

এ ঘটনায় গত ৫ আগস্ট সিনহার বোন শাহরিয়ার শারমিন ফেরদৌস বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরদিন ওসি প্রদীপসহ সতি পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

ওই মামলায় তৃতীয় দফা রিমান্ড শেষে সোমবার ওসি প্রদীপকে আদালতে হাজির করা হয়। কিন্তু মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা র‌্যাবের এএসপি খাইরুল ইসলামের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত চতুর্থ দফায় নতুন করে আরো এক দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

এতে ওসি প্রদীপের সঙ্গে তদন্ত কমিটির সংশ্লিষ্টদের কথা বলা পিছিয়ে গেলো। 

সিনহা নিহতের ঘটনা তদন্ত করতে গত ১ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। পরদিন কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাং. শাজাহান আলি, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) একজন প্রতিনিধি এবং সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসির একজন প্রতিনিধি।

তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও ১০ আগস্ট তদন্ত কমিটির সময় বাড়ানোর আবেদন করে। তখন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় ২৩ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিলো। 

এই মেয়াদে প্রতিবেদন জমা দিতে না পারায় ফের সময় বাড়ানো হয়, যা সোমবার শেষ হয়েছে।

কমিটিকে সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার কারণ ও উৎস অনুসন্ধান করে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।