সারা বাংলা

বৃষ্টি-জোয়ারে ভাসছে ভবদহ: দুর্ভোগে ২ লাখ মানুষ

বৃষ্টি ও মুক্তেশ্বরী-শ্রী-টেকা-হরি—এই চার নদীর জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে যশোরের ভবদহের ৪০ গ্রাম। এসব গ্রামের রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ার পর ঘরবাড়িও ডুবতে শুরু করেছে। এতে পানিন্দি হয়ে পড়েছে দুই লাখ মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে পানি নামতে না পারায় রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয়রা।

ভবদহ এলাকার অভয়নগরের হাটাগাছা গ্রামের দেবী মণ্ডলের ভিটেবাড়ি দেড় মাস ধরে ভাসছে জোয়ারের পানিতে। বাধ্য হয়েই তিনি হাস-মুরগি নিয়ে বাড়ির পাশের উঁচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আবার বৃষ্টি হলে এই রাস্তাও পানির নিচে তলিয়ে যাবে, সেই আতঙ্কে ঘুমাতেও পারি না।’

ঘরের সামনে পানি জমে আছে

দীর্ঘসময় ধরে জলাবদ্ধতার জন‌্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ‘ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি’র আহ্বায়ক অভয়নগরের ডুমুরতলা গ্রামের রণজিৎ বাওয়ালী। তিনি বলেন, ‘গতবছর বৃষ্টি কম হওয়ায় এত জলাবদ্ধতাও ছিল না। কিন্তু এবার গতবারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এরসঙ্গে যোগ হয়েছে মুক্তেশ্বরী-শ্রী-টেকা-হরি নদীর জোয়ারের পানি। দীর্ঘ দেড়মাসেও পানি না নামায় দুই লাখ মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। তারা চর্মরোগ-ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রকম পানিবাহিত রোগে ভুগছেন।’

জমে থাকা পানি সহজে নামছে না

ভবদহ আন্দোলন কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, ‘ভবদহের পানি নিষ্কাশনের মুখ ইজারা দিয়ে মুক্তেশ্বরী নদীর পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করেছে জেলা প্রশাসন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই এলাকার তিন বিলে যে জোয়ারাধার প্রকল্প ছিল, সেগুলো আবার চালু করতে হবে।’

জানতে চাইলে ভবদহ আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক বাবুল বলেন, ‘ভবদহে জোয়ারাধারের কোনো বিকল্প নেই। এই প্রকল্প চালুর জন্য মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) অভয়নগরে মানববন্ধন করেছিন। ২ সেপ্টম্বর যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছি। ’

জমে থাকা পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে লোকজনকে

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ‘এবার অতিবৃষ্টির পাশাপাশি জোয়ারের যে পরিমাণ পানি আসছে, ভাটার সময় সে পরিমাণ পানি নামছে না। নদীগুলোর পাইলট চ্যানেল খনন করা হচ্ছে।’ স্থায়ী সমাধানে জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প জমা দেওয়া আছে বলেও তিনি জানান।