সারা বাংলা

১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর হামলার মুখে পড়েছিলেন আবু ওসমান চৌধুরী

বঙ্গবন্ধু হত্যাকণ্ডের পর ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর একদল সেনা সদস্যের রোষানলের শিকার হয়েছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরী। ওই সেনা সদস্যরা তাকে হত্যার জন্য ঢাকায় তার গুলশানের বাড়িতে হামলা করে। বাড়িতে না থাকায় তিনি সেদিন প্রাণে বেঁচে গেলেও নিহত হন তার স্ত্রী নাজিয়া খানম। মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান ছিল অবিস্মরণীয়। ১৯৭১ সালের ৬ মার্চ আবু ওসমান চৌধুরী পদ্মা-মেঘনার ওপারে কুষ্টিয়া থেকে বরিশাল জেলা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাকে দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গণ নামকরণ করে তিনি রণাঙ্গণের অধিনায়কত্ব গ্রহণ করেন। পরে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার তাকে দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত করে। স্বাধীনতাযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০১৪ সালে স্বাধীনতা পদকে তিনি ভূষিত হন। বণার্ঢ্য জীবনের অধিকারী ছিলেন তিনি। তার জন্ম ১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনেরগাঁও গ্রামে। পরে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। এরপর ১৯৫৮ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন পান। ১৯৬৮ সালের এপ্রিল মাসে তিনি পদোন্নতি পেয়ে মেজর হন। ১৯৬০ সালে কুমিল্লার মৌলভী পাড়ার মনসুর আহম্মেদের বড় মেয়ে নাজিয়া খানমের সঙ্গে আবু ওসমানের বিয়ে হয়। নাসিমা ওসমান ও ফাওজিয়া ওসমান তাদের দুই মেয়ে রয়েছে। এদিকে তার কর্মজীবন সম্পর্কে জানা যায়, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবু ওসমান চৌধুরীকে লেফটেনেন্ট কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এছাড়াও তৎকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে আর্মি সার্ভিস কোরের (এএসসি) পরিচালকের দায়িত্ব দেন। সূত্র মতে, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে আবু ওসমান চৌধুরীকে বিজেএমসির চেয়ারম্যান করা হয়। পরে তাকে চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ছিলেন। উল্লেখ্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের এই সেক্টর কমান্ডার শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।