সারা বাংলা

১৫ বছর পর ধামইরহাট পৌরসভায় ভোটের আমেজ, আছে অনিশ্চয়তাও

আইনি জটিলতায় নওগাঁর ধামইরহাট পৌরসভার প্রায় ১৫ বছর নির্বাচন হয়নি। তবে সীমানবিরোধের মামলার নিষ্পত্তি হওয়ায় ভোটের আয়োজনের পথ সুগম হয়েছে। একদিকে পৌরবাসীর মধ‌্যে উৎসাহ-উদ্দিপনা, চায়ের দোকানের আড্ডা। অন‌্যদিকে সীমানা নিয়ে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে নতুন মামলার শঙ্কায় অনিশ্চয়তাও তৈরি হয়েছে দেড় দশক পরের নির্বাচন নিয়ে। 

জানা গেছে, ২০০৪ সালের ১৫ জুলাই ধামইরহাট পৌরসভাটি স্থাপিত হয়। সেখানে ১৮ মাস প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা বিএনপির সাবেক ও বর্তমান সভাপতি আলহাজ্ব মাহবুবুর রহমান চৌধুরী চপল। তারপর ৩০ মে ২০০৬ প্রথম ও শেষ নির্বাচন হয়। সে নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মাহবুবুর রহমান চৌধুরী চপলকে ২৬ ভোটে পরাজিত করেন সে সময়ে নতুন আওয়ামী লীগে যোগদানকারী আমিনুর রহমান। 

গত ২৭ ডিসেম্বর ২০১১ সালে মেয়র আমিনুর রহমানের মেয়াদকাল শেষ হলেও অজ্ঞাত কারণে আজও পৌরসভার নির্বাচন হয়নি। এলাকা সম্প্রসারণের দাবিতে দুটি মামলার কারণেই নির্বাচন নিয়ে আইনি জটিলতা তৈরি হয়। 

বর্তমানে নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পর আলোচনায় সরকারি দলের নবীন ও প্রবীণ মেয়রর প্রার্থী হিসেবে অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে। কে হবেন নৌকার মাঝি তার জন্য শুরু হয়েছে দৌড় ঝাঁপ। আবার বিএনপি থেকে আলহাজ্ব মাহবুবুর রহমান চৌধুরী চপল প্রার্থী হলে আর কোন প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে বিএনপি’র বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে ভোটের পরিবেশ কেমন হবে, আদৌ ভোট হবে কিনা এসব বিষয়ে সাধারণ ভোটারদের মাঝে অনিশ্চয়তা দেখা দিলেও সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক তৎপরতা। সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চায়ের স্টলগুলোতে শুরু হয় পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি তর্ক আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। 

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও এডভোকেট আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘নাইকো হাসদা দিং পৌরসভার মামলা হাইকোর্টে দাখিল করে। অতঃপর আমি জনস্বার্থে উক্ত মামলার ৫/৮/২০১৮ ইং তারিখে পক্ষভুক্ত হই, সেই সঙ্গে অনেক আপ্রাণ চেষ্টার ফলে গত ৩১/৭/২০১৯ ইং তারিখে শুনানির পর হাইকোর্টে মামলা নিষ্পত্তি হয়। উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে পিটিশনারকারী সুপ্রিমকোর্টে চেম্বার আদালতে আপিল করি, যেটির শুনানি শেষে নিষ্পত্তির ফলে বর্তমানে নির্বাচন প্রক্রিয়া চলমান আছে।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘পৌরসভাকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটা মামলা ছিল, এরই মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়ে পৌরসভার বর্ধিত অংশটির ২ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাকি অংশ টুকু অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একমাস আগে আমার কাছে নির্দেশনা এসেছে। বর্তমানে ২ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার তালিকাসহ সীমানা নির্ধারণের কাজ চলছে। মামলা চলমান থাকায় ৪ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদটি শূণ‌্য হলে সেখানে উপনির্বাচন দেওয়া সম্ভব হয়নি।’

পৌর মেয়র আমিনুর রহমান বলেন, ‘মামলাটি নিষ্পত্তি হয়েছে। শুনছি, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আবার একটা মামলা হতে পারে। এ বিষয়ে আমরা সজাগ রয়েছি। দল চাইলে এলাকার উন্নয়নের জন্য আবার আমি পৌর নির্বাচনে দাঁড়াবো।’

সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা নির্বাচন অফিসার মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমরাতো নির্বাচন চাই। সেই লক্ষে কাজও করছি। কিন্তু পৌরসভাকে নিয়ে বার বার মামলা হওয়ায় আমরা এগোতে পারছিনা। তিনি আরও বলেন, পৌরসভার বর্ধিত অংশটির ২ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে নতুন করে ভোটার তালিকাসহ সীমানা নির্ধারণের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে, সেখানে দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। আশা করি, আমরা খুব শিগ্রই নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে সক্ষম হবো।