কাঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটের পদ্মা নদীতে প্রতিবছর কোটি টাকা খরচ করে নদী খনন করা হলেও কোন কাজেই আসছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী খনন কার্যক্রমের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণেই দক্ষিণাঞ্চলবাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, পদ্মায় বুকে প্রায় সারা বছরই চলে ড্রেজিং কার্যক্রম। তবুও দেশের বৃহৎ নৌরুট শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌপথে মাঝে মাঝেই নাব্য সংকট আর অসংখ্য ডুবোচরে আটকে যায় ফেরি। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাঝ নদীতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাতায়াতকারীদের। সেই সঙ্গে ঘাটের দুপাড়ে আটকে থাকে শত শত পরিবহন। নষ্ট হচ্ছে শত শত কর্ম ঘণ্টা।
বিআইডব্লিটিএ সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর এই রুটটি সচল রাখতে ড্রেজিং খরচ বাবদ বরাদ্দ ৫০ কোটি টাকা। তবুও প্রতি বছর সৃষ্টি হয় অচলাবস্থার। স্থানীয়দের ক্ষোভ বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের ওপর। চরম অসন্তুষ্ট ফেরি, লঞ্চ, স্পিডবোট চালকরা। এই সব অনিয়ম খতিয়ে দেখার দাবি সাধারণ মানুষের।
মাদারীপুরের ট্রাক চালক জহুরুল হাওলাদার বলেন, ‘শুনছি ড্রেজিংয়ের জন্য সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ রাখে। এরপরও প্রতি বছর বর্ষাকালে ফেরি চলাচলে সমস্যা হয়, মাঝে মাঝেই বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়ি আমরা।’
বাস চালক হাফিজুর মৃধা বলেন, ‘ড্রেজিংয়ের অনিয়মের কারণেই এই অবস্থা সৃষ্টি হয়। আমরা ধারণা করছি, সরকারের কোটি কোটি টাকা জলে যাচ্ছে। কোন কাজেই আসছে না। ঠিকমত ড্রেজিং করা হলে এমন হতো না।’
সরেজমিন দেখা গেছে, সারি সারি বালুর স্তূপ পড়েছে নদীর উঁচু জায়গায়। আবার সেই বালুই এসে মিশছে একই নদীতে। এই চিত্র পদ্মা নদীর শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে।
বিআইডব্লিউটিসির কাঁঠালবাড়ী ঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুল আলিম বলেন, ‘এই নৌপথে অসংখ্য ডুবোচর আর নাব্যতা সংকটের কারণে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর আগে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬ পর্যন্ত ফেরি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এখন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।’
বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ছোট-বড় সরকারি নয়টি ড্রেজার দিয়ে বালু অপসারণ করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত এই কাজ চলছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ মোতাবেকই আমরা কাজ করছি। তুলনামূলক এখানে পলি পড়ার হার বেশি। তাই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।’