সারা বাংলা

লাখ টাকার জন্য অপারেশন হচ্ছে না মেধাবী মেয়েটির

লাখ টাকার জন্য অপারেশন হচ্ছে না ফুলের মতো মেয়ে মাইশা আক্তারের।  কোমরের হাড় ভেঙে এখন পড়ে আছে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের বারান্দার ফ্লোরে।

নরসিংদীর পলাশ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সদ্য এসএসসি পাস করা মাইশার জীবনে ২৭ আগস্ট এক ভয়ঙ্কর দিন।  ওই দিন পেয়ারা পাড়তে গিয়ে টিনের চাল থেকে পড়ে কোমরের হাড় ভেঙে যায় তার।

পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার গড়পাড়া গ্রামের এই মেয়েটি এখন পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি।  তার পরিবার বলছে, আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হলে অপারেশন করা প্রয়োজন মাইশার। 

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সেই অপরাশেনের ব্যয় হবে প্রায় এক লাখ টাকা।  কিন্তু দিনমজুর বাবা মোখলেছুর রহমানের পক্ষে এক লাখ টাকা জোগাড় করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।  তিনি নিজেও একটি দুর্ঘটনায় পড়ে অচল হয়ে এখন ঘরে বসা।  তবুও সমাজের কয়েকজনের কাছ থেকে হাত পেতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা জোগাড় করেছেন তিনি।  কিন্তু এক লাখ টাকা কোনোভাবেই জোগাড় করতে পারছেন না।  যে কারণে মাইশার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাটি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। 

জানা গেছে, বাবা মোখলেছুর রহমান মেঘনা গ্রুপে শ্রমিকের কাজ করতেন।  সেখানে একটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অচল হয়ে প্রায় চার বছর ধরে শয্যাশায়ী তিনি।  মোখলেছুর রহমানের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে মাইশা আক্তার তৃতীয়।  বড় বোনের বিয়ে হয়েছে।  মেঝো বোন প্রাণ কোম্পানিতে চাকরি করে সংসার চালানোর পাশাপাশি ছোট বোন মাইশার লেখাপড়ার খরচ বহন করতেন।

মাইশা মেধাবী ছাত্রী হওয়ায় পরিবারের সবার স্বপ্ন ছিল তাকে লেখাপড়া শিখিয়ে উচ্চ শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তোলার।  মাইশারও স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শেষ করে চাকরি করার মাধ্যমে অভাব-অনটনের সংসারের হাল ধরার।  কিন্তু দুর্ঘটনার কারণে বর্তমানে মাইশার জীবন বাঁচানোটাই যেন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে তার পরিবারের।

মাইশার চিকিৎসার জন্য সরকারের সহযোগিতাসহ স্থানীয় দানশীল ব্যক্তিদের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

পলাশ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, মাইশা আক্তার একজন মেধাবী ছাত্রী।  গরীব ঘরের সন্তান হওয়ায় স্কুলে পড়াকালীন তাকে সব শিক্ষকরা সহযোগিতা করতো।  তার এমন দুর্ঘটনা সত্যিই বেদনাদায়ক।  আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে তার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবো।