সারা বাংলা

দুদকের মামলায় ওসি প্রদীপকে চট্টগ্রাম আদালতে তোলা হবে সোমবার

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি, টেকনাফ থানার ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশকে দুদকের মামলায় চট্টগ্রাম আদালতে তোলা হবে আগামী সোমবার।

ইতিমধ্যে দুদকের মামলায় ওসি প্রদীপকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে তাকে কক্সবাজার কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসা হয়েছে।

আগামী সোমবার সকাল ১০টায় প্রদীপকে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হবে। এদিকে একই মামলায় ওসি প্রদীপের স্ত্রী চুমকি আসামি হলেও সে পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি দুদক। তবে চুমকি যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে, সে ব্যাপারে দুদকের পক্ষ থেকে পুলিশকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

দুদকের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট সানোয়ার আহমেদ লাভলু জানান, প্রায় ৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে গত ২৩ আগস্ট ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে মামলা দম্রি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন। গত ২ সেপ্টেম্বর এই মামলায় আসামি প্রদীপকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখায় আদালত। একই সঙ্গে ১৪ সেপ্টেম্বর (সোমবার) ওসি প্রদীপকে আদালতে হাজির করার আদেশ দেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ আশফাকুর রহমান। আদালতের আদেশ অনুযায়ী ওসি প্রদীপকে আদালতে হাজির করতে আজ শনিবার দুপুরে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসা হয়।

ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকারী দুদক চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন জানান, ২০১৮ সালে প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের অবৈধ সম্পদ অর্জনের তদন্ত শুরু করে দুদক। ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল তাদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে বলা হলেও চুমকি তা জমা দেন ২০১৯ সালের ১২ মে।

দুদকের দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ‘ওসি প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কারণ পেশায় একজন গৃহিণী। তিনি কোথাও চাকরি করেন না। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট দানপত্র দলিল মূলে নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন পাথরঘাটা এলাকায় জমিসহ একটি ছয়তলা বাড়ি তার পিতার কাছ থেকে পেয়েছেন। শ্বশুরের কাছ থেকে প্রদীপের স্ত্রীর উপহার পাওয়া বাড়ি নিয়ে দুদকের তদন্তে দেখা যায়, চুমকি কারণকে তার পিতা একটি বাড়ি দানপত্র করে দিলেও তার অন্য দুই ভাই ও এক বোনকে কোনো বাড়ি দানপত্র করেননি। এতে প্রতীয়মান হয়, ওসি প্রদীপ কুমার দাশের ‘ঘুষ ও দুর্নীতি’র মাধ্যমে অর্জিত আয় গোপন করার উদ্দেশ্যে স্থানান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে তার শ্বশুরের নামে ওই বাড়ি নির্মাণ করে রূপান্তরপূর্বক পরে চুমকি কারণের নামে দানপত্র করে নিয়ে প্রদীপ দাশ ভোগদখল করছেন।’

‘প্রদীপের গৃহিণী স্ত্রী চুমকি কারণ কমিশন ব্যবসায়ী হিসেবে ২০১৩-১৪ সালে প্রথম আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন। পরে মৎস্য ব্যবসায়ী ও বাড়ি ভাড়া থেকে আয় দেখিয়ে আয়কর রিটার্ন জমা দেন। তিনি ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ কর বছরে আয়কর রিটার্নে কমিশন ব্যবসা বাবদ ব্যবসার মূলধন ১১ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং আয় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেখান। তবে দুদক তদন্ত করে দেখে, কমিশন ব্যবসার লাইসেন্স, সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে ব্যবসা করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র, ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বা অন্য কোনো রেকর্ডপত্র সরবরাহ করতে পারেনি।’

দুদক পিপি সানোয়ার আহমদ লাভলু জানান, দুদকের এই মামলার ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে ওসি প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কারণকে এবং দুই নম্বর আসামি ওসি প্রদীপ। এই মামলায় এখনো চুমকি কারণকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি দুদক।