সারা বাংলা

নূরানি কিন্ডারগার্টেনে পাঠদান, করোনা ঝুঁকিতে শিশুরা

করোনা মহামারিতে সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও ঝালকাঠির রাজাপুরে ব্যতিক্রম দেখা গেছে।

গত বুধবার থেকেই সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে উপজেলার প্রায় বারটি নূরানি কিন্ডারগার্টেন খোলা রেখে পাঠদান শুরু করেছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। এতে করোনা ঝুঁকিতে আছেন উপজেলার প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিশু-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।

রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা সদরের নূরানি কিন্ডার গার্টেন ও রাজাপুর নূরানি তা‘লীমুল কুরআন মডেল মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য বিধি না মেনেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। এসময় কোনো শিশু শিক্ষার্থীর মুখে মাস্ক ছিল না। এমনকি ঐ সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও মুখে মাস্ক ব্যবহার না করেই ক্লাশ নিচ্ছেন। ছিল না হাত ধোয়ার সাবান,পানির ব্যবস্থা বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার। এসময় সামাজিক দূরত্বও মানা হচ্ছে না।

অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে ও স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে নিজেদের খেয়াল খুশিমত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে পাঠদান শুরু করেছেন নূরানি কিন্ডার গার্টেনের প্রধানরা। কিছুদিন আগে উপজেলার আংঙ্গারিয়ায় এভাবে একটি শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে পাঠদান শুরু করা হয়েছিল। ক্লাশ শুরুর কয়েদিনের মধ্যে প্রতিষ্ঠান প্রধানের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এরপরে একে একে প্রায় দশজন শিক্ষার্থী জ্বর ও সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হলে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। সব কিছু জানার পরেও আবার নূরানি কিন্ডার গার্টেনগুলো সরকারি নির্দেশ ছাড়াই পাঠদান শুরু করেছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোন নজরদারি দেখা যাচ্ছে না।

অভিভাবক সেফালি বেগম, হাসি বেগম, কুরছিয়া বেগম, বিউটি বেগম বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কঠোর নির্দেশনার কারণে করোনার মধ্যেও বাচ্চাদের মাদ্রাসায় নিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছি।’

রাজাপুর নূরানি তা‘লীমুল কুরআন মডেল মাদ্রাসার প্রধান মো.ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘নূরানি বোর্ডের মৌখিক অনুমতি পেয়ে গত বুধবার থেকে পাঠদান শুরু করেছি।’

এসময় মাদ্রাসা খোলার অনুমতির কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি এই শিক্ষক।

রাজাপুর নূরানি কিন্ডারগার্টেনের পরিচালক মাওলানা মো. জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের প্রতিষ্ঠান খোলার খবর পেয়ে নূরানি বোর্ড থেকে আমরা প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি নিয়ে ক্লাশ শুরু করেছি।’

সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে কেন কয়েকশত শিক্ষার্থীকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে ফেললেন?—  এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহাগ হাওলাদার জানান, শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। এর পরেও যদি তারা সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ক্লাশ চালু রাখেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।