সারা বাংলা

হাওরে যাত্রীবাহী ট্রলারের অবাধ চলাচল, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে নেত্রকোনার হাওরগুলোতে অবাধে চলছে যাত্রীবাহী ট্রলার। ট্রলারে লাইফ জ্যাকেট ও হাওয়া ভর্তি টায়ার ব্যবহার করার কথা থাকলেও কেউ এই নির্দেশনা মানছেন না।

এছাড়াও মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই সাধারণ মানুষ অবাধে চলাচল করছেন এসব ট্রলার দিয়ে। এতে নৌ-দুর্ঘটনার পাশাপাশি করোনা প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা করছে সচেতন মহল।

স্থানীয়দের অভিযোগ, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাইফ জ্যাকেট ও হাওয়া ভর্তি টায়ারসহ সীমিত আকারে যাত্রী বহন করার জন্য ট্রলার মালিকদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিছুদিন এই নিয়ম কার্যকর থাকলেও বর্তমানে তা কেউ মানছেন না। এতে করে আবারো দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় কোনো ট্রলারে একটি এবং কোনোটাতে মাত্র ৩ থেকে ৪টি লাইফ জ্যাকেট রয়েছে। কিন্তু হাওয়া ভর্তি কোনো টায়ার নেই। অথচ প্রতি ট্রলারে ৫০ থেকে ১০০ জন যাত্রী বহন করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ট্রলার মালিক আব্দুর আসাদ জানান, দুর্ঘটনার পর থেকে হাওরে পর্যটক আসা কমে যাওয়াতে তাদের ব্যবসা খারাপ যাচ্ছে। এর ফলে তারা সরঞ্জামাদি কিনতে পারছেন না।

মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী গ্রামের মো. কামাল মিয়া, মদনের মো. শফিক জানান, প্রতিদিন হাওরে অনেক ট্রলার চলাচল করে। কিন্তু কিছুদিন আগে ট্রলার ডুবে অনেকে নিহত হয়েছেন। এরপর সরকারিভাবে লাইফ জ্যাকেটসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি রাখার কথা থাকলেও ট্রলারে এসব কিছু নেই। এতে করে যেকোনো সময় আবারও দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত সরকারি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

এদিকে, উচিতপুর ঘাটের ইজারাদার আ. হালিম জানান, নৌ-দুর্ঘটনার পর এবছর পর্যটকের সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে। এর ফলে মানুষের আয় রোজগার অনেক কমে গেছে। যার ফলে অনেক মাঝি লাইফ জ্যাকেটসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কিনতে পারছেন না। তবে সবাইকে সরঞ্জাম কেনার জন্য বলা হয়েছে।

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বুলবুল আহমেদ জানান, জেলায় পরপর দুইটি নৌ-দুর্ঘটনার পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ট্রলার মালিকদের লাইফ জ্যাকেট, হাওয়া ভর্তি টায়ার ব্যবহার করে সীমিত আকারে যাত্রী বহন করার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও নির্দেশনা অমান্যকারীদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজাও দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই সরজমিনে গিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ‌্য, গত ৫ আগস্ট নেত্রকোনার মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী রাজালীকান্দা হাওর এলাকায় ট্রলার ডুবিতে ১৮জন যাত্রী মারা যান। এর পরপরই ৯ সেপ্টেম্বর কলমাকান্দা উপজেলার রাজানগর এলাকার ভোগাই নদীতে যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে ১২ জন নিহত হন।