সারা বাংলা

১৪ শিশুর অভিনব সাজা: বাবা-মার সেবাসহ ৮ শর্তে বাড়ি পাঠালেন আদালত 

সুনামগঞ্জে ১৪ শিশুর বিরুদ্ধে ১০ মামলায় অপরাধ প্রমাণ হলেও তাদের শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে পাঠালেন না আদালত। বরং মা-বাবার আদেশ পালন, তাদের সেবা এবং গাছ রোপণ ও পরিচর্যাসহ আটটি শর্তে ওই শিশুদের অভিভাবকদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। তবে শর্তভঙ্গ করলে তাদের আবার আটক করা হবে বলেও রায়ে বলা হয়েছে। 

বুধবার দুপুরে এ রায় দেন সুনামগঞ্জে নারী- শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালত। বিচারক মো. জাকির হোসেন সংশোধনের জন্য বন্ডের মাধ্যমে শিশুদেরকে অভিভাবকের জিম্মায় দেন। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালতের সরকারি কৌঁশলী অ্যাডভোকেট নান্টু রায়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাস করে টাকা নেওয়ার অপরাধে আহমেদ সালেহ তায়্যিবের বিরুদ্ধে মামলা হয়। আবু সাইদ, মিজানুর রহমান, রাব্বুল মিয়া, জুনায়েদ আলমের বিরুদ্ধে মামলা হয় মোবাইল ফোনে কন‌্যাশিশুর ছবির সঙ্গে ছবি সংযুক্ত করে ফেইসবুকে ছাড়া ও মানহানির অপরাধে। পুলিশকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলে বাধাদান ও আরেক মামলার আসামি পালানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করার দায়ে মামুন মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়। রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা হয়। আলী আকবর, মন্তাজ আলীর বিরুদ্ধে মামলা হয় দলবদ্ধভাবে লাঠি দিয়ে মারপিট করে সাধারণ জখম করার অপরাধে। তারেকের বিরুদ্ধে মাদক রাখার অপরাধে মামলা হয়। আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে লাঠি দিয়ে মারপিট করার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। রতন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মাদক রাখার অভিযোগে মামলা হয়। ফয়জুল ইসলামের বিরুদ্ধে জুয়া খেলার অপরাধে মামলা হয়। দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে দলবদ্ধভাবে লাঠি দিয় মারপিট করে সাধারণ জখমসহ হত্যার হুমকি দেওয়ার অপরাধে মামলা হয়।

১০ মামলার এই ১৪ শিশুদেরকে ৮টি শর্ত মেনে চলতে হবে। আর শিশুদের শর্তপালনসহ সকল কর্মকাণ্ড তদারকি করবেন সমাজ সেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা শাহ মো. শফিউর রহমান।

তিনি জানান, প্রবেশনে আদালতের শর্তগুলো মেনে চলাফেরা করতে হবে। তাদেরকে বাবা-মায়ের আদেশ-নির্দেশ মেনে চলতে হবে। এছাড়া বাবা-মায়ের সেবা করা, প্রতিদিন যার যার ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা, নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ, প্রত্যেকে কমপক্ষে ২০টি গাছ লাগানো ও পরিচর্যা করা, অসৎ সঙ্গ ত্যাগ, মাদক থেকে দূরে থাকা এবং ভবিষ্যতে কোনো অপরাধের সঙ্গে নিজেকে না জড়ানোর শর্ত দেওয়া হয়েছে। এই সকল শর্ত মানতে ব্যর্থ হলে আবার আটক করে টঙ্গি কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হবে।

প্রবেশন কর্মকর্তা শাহ মো. শফিউর রহমানের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই আদালত পরবর্তী নির্দেশ দেবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।