সারা বাংলা

‘এ বছর আর না খায় থাকিবা হবেনি’

‘আল্লাহ এইবার হামার মুখেরতি দেখিচে। এ বছর আর না খায় থাকিবা হবেনি। সউগ মাহাজন শোধ করে দিম।’

হাসিমুখে কথাগুলো বলছিলেন ঠাকুরগাঁও সদরের শিবগঞ্জ এলাকার কৃষক মনসুর আলী।

মনসুর আলী এবার ২ বিঘা জমিতে আগাম ফুলকপি আবাদ করেছেন। ফলন ও দাম ভালো থাকায় হাসি ফুটেছে মনসুর আলীর মতো আরও অনেক কৃষকের।

ঠাকুরগাঁওয়ে ফুলকপিসহ হরেক রকম সবজি চাষ হয়। এখানকার সবজি নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে সারা দেশে সরবরাহ করা হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৮২৪ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার ৮৩০ মেট্রিক টন। যার মধ্যে শুধু ফুলকপি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৭২ হেক্টর জমিতে । লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ২০ ভাগই আগাম চাষ করা হয়েছে।

ফুলকপি চাষে বিঘা প্রতি আনুমানিক খরচ প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। বাজার দর ভালো হওয়ায় এবার ক্ষেত থেকে পাইকারি দরে বিঘা প্রতি লক্ষাধিক টাকার কপি বিক্রি করা হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও ভেলাজানের কৃষক নজরুল বলেন, ‘গত বছর ধান আবাদ করে লোকসান হয়েছিল। তাই এছর আমি ৬ বিঘা জমিতে আগাম লিডার জাতের ফুলকপি চাষ করেছি। বিঘা প্রতি প্রায় ৬ হাজারের মতো গাছ রয়েছে। প্রতি বিঘা ফুলকপি চাষে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। বাজারে এখন যে দাম রয়েছে তাতে আমি বিঘাপ্রতি প্রায় দেড় লাখ টাকা পাবো।’

একই এলাকার রফিকুল বলেন, ‘আমি ৭ বিঘা জমিতে ফুলকপির চাষ করেছি। ফলন অনেক ভালো হয়েছে। প্রথম চালানে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে প্রায় ১৫০০ কেজি ফুলকপি বিক্রি করেছি। ১০-১২ দিনে সব কপি বাজারজাত করতে পারবো বলে আশা করছি। সচরাচর এমন ভালো দাম পাওয়া যায় না। বাজার অনেক ভালো।  এই দর অব্যাহত থাকলে অনেক লাভ হবে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আফতাব হোসেন বলেন, ‘এই জেলার মাটি ও আবহাওয়া ফুলকপি চাষের উপযোগী। এবার ফলন অনেক ভালো হয়। লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ২০ ভাগ বেশি জমিতে ফুলকপির আবাদ হয়েছে। আমরা মাঠ পর্ষায়ে চাষিদের কপির ভালো ফলনের জন্য পরামর্শ দিয়ে আসছি। বিশেষ করে কোন ধরনের পরিচর্যা নিতে হবে। কখন সেচ, সার, ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। আগাম জাতের কারণে কিছু পার্থক্য আছে। সেই সব বিষয়গুলো আমরা কৃষকদের অবহিত করছি।’