সারা বাংলা

সুপারি গাছের খোলে নান্দনিক তৈজসপত্র

সুপারি গাছের খোল। গ্রামে এটা খুবই সহজলভ‌্য। সাধারণত জ্বালানি হিসেবে এটা ব‌্যবহার করা হয়। কিন্তু এই সাধারণ খোল দিয়ে অসাধারণ তৈজসপত্র তৈরি করছেন লক্ষ্মীপুরের মামুনুর রশিদ।

মামুনুর রশিদের বাড়ি রায়পুর পৌরসভার কেরোয়া গ্রামে। ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখা জানতে পারেন এই ফেলনা সুপারির খোল দিয়েও নানা জিনিসপত্র তৈরি করা যায়। এরপর ২০১৯ সালে রায়পুর পৌর শহরের তুলাতুলি এলাকায় গড়ে তোলেন ছোট একটি কারখানা। টিনসেড একটি ঘরে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসিয়ে তৈরি শুরু করেন বাসন-কোসন। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, থালা, বাটি, নাস্তার ট্রে, ঘড়ি, ফটোফ্রেম, ওয়ালমেট ও জুতা। পণ্যগুলো যত্ন নিয়ে ব্যবহার করলে কয়েক বছর পর্যন্ত টিকে। এখানকার তৈরি পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। ভবিষ্যতে বিদেশেও রপ্তানি করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান মামুনুর রশিদ।

স্থানীয়রা জানান, জেলায় প্রচুর সুপারি গাছ রয়েছে। সহজেই পাওয়া যায় সুপারি গাছের খোল। আকর্ষণীয় পণ্য সামগ্রী তৈরি হওয়ায় এখন এই খোলের কদর বেড়েছে। এগুলো সংরক্ষণ করে একসঙ্গে বিক্রি করা হয় মামুনুরের কারখানায়।

মামুনুর রশিদ বলেন, ‘সুপারি গাছের খোলে তৈরিকৃত তৈজসপত্রগুলো আকর্ষণীয় ও পরিবেশবান্ধব। দেশ-বিদেশে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ইতিমধ্যে প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে মানুষ এই পণ্য ব্যবহার করছে। বর্তমানে অনলাইন মার্কেটিংয়ের পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী পরিচিতদের কাছে বিক্রি করছি। ভবিষ্যতে দেশের বাইরেও বিক্রি করতে চাই।’

যে কেউ চাইলেই এ পণ্য তৈরি করতে পারবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে আগ্রহীদের পরামর্শ, প্রশিক্ষণ ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে সহযোগিতা করা হবে। আমি মনে করি, সুপারি গাছের খোল দিয়ে তৈজসপত্র তৈরির উদ্যোক্তা বেশি হলে এটি শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তাতে তৈরি হবে নতুন কর্মক্ষেত্র।’

কারখানায় বর্তমানে থালা-বাটিসহ ৭ ধরনের পণ‌্য তৈরি হচ্ছে বলে জানান তিনি। সেখানে ৬ জন শ্রমিক প্রতিনিয়ত কাজ করছেন। আগামীতে আরও বড় পরিসরে কারখানা স্থাপন ও নতুন পণ‌্য তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে লক্ষ্মীপুরের এই উদ্যোক্তার।