সারা বাংলা

অস্ত্র-বিস্ফোরকসহ শীর্ষস্থানীয় ৪ জঙ্গি গ্রেপ্তার 

বগুড়ায় অস্ত্র, বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির শীর্ষস্থানীয় চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার (৬ নভেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার চণ্ডিহারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

শনিবার (৭ নভেম্বর) বেলা ১১টায় বগুড়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেন। এ সময় পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁঞা উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন, নব্য জেএমবির আইটি শাখার সদস্য তানভীর আহম্মেদ ওরফে আবু ইব্রাহিম (২৫), মিডিয়া শাখার প্রধান জাকারিয়া জামিল (৩১), সক্রিয় সদস্য আতিকুর রহমান (২৮) ও আবু সাঈদ (৩২)।

প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিআইজি আব্দুল বাতেন বলেন, নাশকতার উদ্দেশ্যে জঙ্গিরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চণ্ডিহারা এলাকার একটি স্থানে সমবেত হচ্ছেন- এমন তথ্যের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সেখানে অভিযান চালায়। অভিযানে চারজনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, দুই রাউন্ড গুলি, এক কেজি বিস্ফোরক, চারটি ব্যাটারি ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়। 

ডিআইজি জানান, গ্রেপ্তার চারজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদের নব্য জেএমবির (জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ) সক্রিয় কর্মী এবং নাশকতা চালানোর জন্য আলোচনা করতে বগুড়ায় সমবেত হয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন। 

তিনি আরও জানান, পুলিশ তানভীর এবং জামিলকে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছে। তানভীর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি বিভাগের ছাত্র। গত জানুয়ারি মাসে সাভারের আশুলিয়ায় তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জঙ্গি বই, ইলেকট্রনিক ও ড্রোন তৈরির সরঞ্জামসহ তার স্ত্রীকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় তানভীরের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তখন থেকে তিনি পলাতক। তানভীর ড্রোন দিয়ে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন। 

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, জামিল নব্য জেএমবির মিডিয়া শাখার প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি অনলাইন এক্টিভিস্ট। জঙ্গি সংক্রান্ত অনলাইনে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রকাশনা তিনি আরবি থেকে বাংলায় অনুবাদ করে প্রচার করতেন। জামিলও পলাতক আসামি। আটক আতিকুর রহমান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ছাত্র। তিনি নতুন সদস্য এবং অর্থ সংগ্রহের দায়িত্ব ছিলেন। আর আবু সাঈদ যুদ্ধ করার জন্য মধ্যপ্রাচ্য যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। 

উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক দিয়ে ৫০টির মতো উচ্চক্ষমতার বোমা বানানো সম্ভব বলে জানান ডিআইজি আব্দুল বাতেন।

এই চারজনের বিরুদ্ধে থানায় অস্ত্র, বিস্ফোরক ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পৃথক পৃথক মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।