অযত্ন, অবহেলা আর দখলদারদের দৌরাত্ম্যে অস্তিত্ব হারাচ্ছে চাঁদপুরের খালগুলো।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুরো জেলার বিভিন্ন খালের অস্তিত্ব সংকটের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। স্থানীয় প্রভাবশালীরা প্রভাব খাটিয়ে খালের জায়গা দখল করে মার্কেট, দোকান গড়ে তুলেছেন। অবৈধ স্থাপনার কারণে সেচ খালের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক। খালগুলোতে ফেলা হচ্ছে নানা রকম বর্জ্য। এতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।
জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর সিআইপি বেড়িবাঁধের ভেতরে ৭৫৪ কিলোমিটারের খাল রয়েছে। খালে শিল্পনগরীর বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে দূষিত হচ্ছে পানি।
চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘চাঁদপুর পৌর এলাকার বিসিক শিল্পনগরীর বর্জ্য পদার্থ খালে পড়ছে। যা খালের মাধ্যমে ডাকাতিয়া নদীতে যাচ্ছে। এতে পানি ও পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। এটার বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। ইউনিয়ন পর্যায়ে যদি কোনো খালের আশেপাশে অবৈধ স্থাপনা থাকে তাহলে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
খালপারের দখলদার উচ্ছেদ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের সহকারী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম পর্যায়ে খাল পারের ২২৭টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করি। সেখানে আমরা প্রায় ৩ একর ভূমি বেদখল করতে সক্ষম হই। বাগাদীর মতিন মাওলানা ব্রিজের আশপাশের এলাকা থেকে সদরের চান্দ্রা, হানারচর ও এর আশপাশের ৩৩৯টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে মামলা করা হয়েছে। দ্রুতই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, ‘খাল পারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে আমরা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছি। সেখানে সংশ্লিষ্ট তথ্যও জমা দিয়েছি। যেকোনো সময় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হবে।’
অবৈধ স্থাপনার তথ্য জেলা প্রশাসন পেয়েছে নিশ্চিত করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অসীম চন্দ্র বনিক বলেন, ‘আমরা শুধু ঊর্ধ্বতনদের সিগন্যালের অপেক্ষায় রয়েছি। সেটা পেলেই খাল পারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করবো। আমরা খাল টিকিয়ে রাখতে এবং খালের সৌন্দর্য বর্ধনে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে দ্রুত পরিকল্পনা নিচ্ছি।’