সারা বাংলা

ঝুঁকিতে রাঙামাটি শহরের ফিসারি সংযোগ সড়ক

পর্যটন শহর রাঙামাটিতে প্রবেশ করতেই ফিসারি সংযোগ সড়ক মুগ্ধ করে পথচারীদের। রাঙামাটি শহরবাসীর কাছেও এ স্থানটি খুবই প্রিয়। প্রতিদিনই এ সড়কে শহরবাসীদের ঘুরতে আসতে দেখা যায়। 

শহরের তবলছড়ি, বনরূপা এবং রিজার্ভবাজারে যোগাযোগের একমাত্র এই সংযোগ সড়ক এটি।

সড়কটির ঠিক মাঝখানে আধা কিলোমিটার সড়ক কাম বাঁধ এর দুইপাশে সারি সারি কৃষ্ণচূড়া, কড়ই, জামরুলসহ নানা প্রজাতির বৃক্ষ তৈরি করেছে এক নয়নাভিরাম আবহ। রাঙামাটি শহরে কোনো পর্যটক এলে এই নয়নাভিরাম দৃশ্যে মুগ্ধ হন। 

নজর কেড়ে নেওয়া এই বাঁধের মতো সড়কটি এখন চরম ঝুঁকিতে। সড়কটির উভয়পাশে বেশ কয়েকটি স্থানে ফাটল, বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাই এই ঝুঁকির কারণ। অতিরিক্ত চাপ ও কম্পনে সড়কটি যে কোনো সময়েই ধসে পড়তে পারে।

অন্যদিকে এই সড়কে কোন ফুটপাত না রেখেই সড়ক সম্প্রসারণ করা হয়েছে। বর্ষাকালে সড়ক সংলগ্ন হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ার কারণেও সড়কটি স্বকীয়তা অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সড়কটির দু'পাশে ৫ শ'র বেশি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ থাকলেও ক্রমেই তা কমে যাচ্ছে। এখন রয়েছে মাত্র ৩শটি। তাও এখন বেশ ঝুঁকিতে।  ইতোমধ্যে পানির টানে তলের মাটি সরে যাওয়ায় উপড়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি বৃক্ষ। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে রয়েছে উদ্বেগ।  

সড়কটিতে সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে কথা হয় পথচারী দীপ্ত হান্নান ও মো: শাহ আলমের সাথে। 

তারা জানান, তাদের জন্ম এই রাঙামাটি শহরে। ছোটবেলা থেকে এ সড়কে তাদের আসা-যাওয়া। এ সড়কটি সেই আগের মতো আর নেই। বর্তমানে সড়ক এবং গাছগুলোর অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সড়কটির আশু সংস্কারেরও দাবি জানান তারা।

রাঙামাটি নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব এম জিসান বখতেয়ার বলেন, রাঙামাটিতে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা কাজ করছে। সমন্বয়হীনতার অভাবে তিন এলাকার জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি এবং গাছগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অতি দ্রুত সড়কটির সংস্কার জরুরী।

দেখা গেছে, সড়কটির পাশে বেশকিছু স্পিড বোট এর ঘাট এবং সড়কটিতে সংকীর্ণ সংযোগ বাঁধে গাড়ী পার্কিং এবং পণ্য উঠানামার কারণে প্রতিনিয়তই সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে, সংযোগ সড়কটির উভয়পাশে বেশ কয়েকটি স্থানে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। অপ্রয়োজনীয়ভাবে সম্প্রসারিত অংশের উপর দিয়ে চলাচল করছে ভারী যানবাহন। যা সড়কটির জন্য হয়ে উঠছে বড় ধরনের ক্ষতির কারণ। 

রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহে আরেফীন বলেন, সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে এ ফিসারি বাঁধ এলাকায় বড় আকারের প্রকল্প হাতে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। সড়ক বিভাগ শুধু সড়কটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য যতটুকু করা সম্ভব বিভিন্ন সময়ে তাই করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, ৬শ মিটার এ বাঁধে আমরা ৩টি ঝুঁকির্পূর্ণ স্পট চিহ্নিত করে পিলার দেওয়া হয়েছে যাতে কোন গাড়ি পড়ে না যায় এবং রাস্তাটিও রক্ষা পায়।

এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ফিসারি সংযোগ সড়কটির দু'পাশে সৌন্দর্য বর্ধন ও সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন আছে। 

তিনি আরো বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে কর্ণফুলী বেসিন স্ট্যাডি প্রজেক্ট নামে একটি সার্ভে প্রকল্প চলমান আছে। এটি সম্পন্ন হলে ফিসারি সংযোগ সড়কসহ ওই প্রকল্পের নির্দেশনার আলোকে পরবর্তীতে বৃহৎ আকারে রাঙামাটি জেলায় প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।